সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসপাতালগুলির নিরাপত্তায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপর ভরসা নয়। সমস্ত সরকারি হাসপাতাল থেকে সরানো হোক সিভিকদের। মঙ্গলবার আর জি কর মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতে এমনই সওয়াল করলেন চিকিৎসকদের আইনজীবী করুণা নন্দী ও ইন্দিরা জয় সিং। তাঁদের প্রস্তাব, কোনও বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তাকর্মীদের দিয়ে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। তাতে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বলের প্রস্তাব, রাজ্য পুলিশ মোতায়েন করা হোক। তাঁরা সুরক্ষার দায়িত্ব নিক। উল্লেখ্য, আর জি করে তরুণীর ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া সঞ্জয় রায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। তাই সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপর আস্থা নেই কারও।
আর জি কর কাণ্ডের পর কর্মস্থলে যথাযথ নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। গত ৯ তারিখের শুনানিতে আদালত তাঁদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিলেও এখনও তা কার্যকর হয়নি। মঙ্গলবার শুনানিতে ফের এই প্রসঙ্গ উঠলে প্রধান বিচারপতি জানতে চান, জুনিয়র ডাক্তারদের নিরাপত্তায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাতে সিব্বল জানান, বেসরকারি সংস্থা থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে এসে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তাঁরাই হাসপাতালের নিরাপত্তায় থাকবেন।
তাতে প্রবল আপত্তি জানান ডাক্তারদের আইনজীবী করুণা নন্দী ও ইন্দিরা জয় সিং। তাঁদের বক্তব্য, ১৫১৪ সিভিক ভলান্টিয়ারকে রাখা হয়েছে হাসপাতালগুলিতে। তাঁদের নিরাপত্তায় মোটেই স্বচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না জুনিয়র ডাক্তার, নার্সরা বা অন্য মহিলা কর্মীরা। তাই সিভিকদের সরিয়ে রাজ্য পুলিশকে নিয়োগ করার আর্জি রইল। এর পর প্রধান বিচারপতি রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বলের কাছে জানতে চান, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সিব্বল জানান, আর জি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালেই নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নজরদারির জন্য সিসিটিভির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
এসব শুনে ডিওয়াই চন্দ্রচূড় রীতিমতো ভর্ৎসনার সুরে প্রশ্ন করেন, অস্থায়ী নিরাপত্তা কেন হাসপাতালে? বেসরকারি এজেন্সি থেকে নিরাপত্তা কর্মীদের আনলে তাঁদের কি প্রশিক্ষণ বা পরিচয়পত্র দেওয়া হবে? কীভাবে কাজ করবেন তাঁরা? তাতে সিব্বলের জবাব, ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। এই জবাবে সন্তুষ্ট নন বিচারপতিরা। তাঁরা ডাক্তারদের আইনজীবীদের প্রস্তাবমতো রাজ্য পুলিশকে নিরাপত্তায় মোতায়েন করার পক্ষে। এ নিয়ে একটা কমিটি গঠিত হোক, নির্দেশ প্রধান বিচারপতির। এছাড়া ২ সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত হাসপাতালে পর্যাপ্ত সিসিটিভি লাগানোর কথাও বলা হয়েছে। এখন দেখার, এই নিরাপত্তা ইস্যুতেই কি কর্মবিরতি তুলতে নারাজ হবেন জুনিয়র চিকিৎসকরা? নাকি কাজে ফিরবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.