সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিলকিস বানো (Bilkis Bano) গণধর্ষণ কাণ্ডে দোষীদের জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার (Gujarat)। ইতিমধ্যেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (Vishwa Hindu Parishad) তাদের প্রায় ‘বীরে’র মর্যাদা দিয়েছে। কিন্তু এরই সঙ্গে ওই ধর্ষকদের মেয়াদ শেষের আগেই মুক্তি দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। এহেন পরিস্থিতিতে ওই মামলার অন্যতম তদন্তকারী অফিসার বিবেক দুবে জানালেন, এই ধরনের প্রতিবাদ ‘সংবিধান বিরোধী’। সেই সঙ্গেই তাঁর দাবি, ওই ধর্ষকরা সকলেই সংশোধিত হয়ে গিয়েছেন।
১৮ বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলার তদন্ত শুরু হয়। সেই সময় সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা ছিলেন বিবেক। ২০১৫ সালে অবসর নেন তিনি। এবার এই বিতর্কে মুখ খুললেন তিনি। তাঁর কথায়, ”জনতার একাংশ ও সংবাদমাধ্যম যেভাবে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে, প্রতিবাদ মিছিল করছে, দাবি করছে বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি পাওয়া অন্যায্য তা ভিত্তিহীন। কেবল প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়েই এমনটা বলা হচ্ছে। এটা ভারতের সংবিধানের পরিপন্থী।”
তাঁর দাবি, কোনও অপরাধীকে সংশোধনাগারে রাখার উদ্দেশ্য বদলা নেওয়া নয়। তাদের সংশোধিত করা। বিবেক বলছেন, ”জেলে বন্দিদের অনুপ্রাণিত করার জন্য ধর্মীয় ও অনুপ্রেরণামূলক ভাষণ শোনানো হয় যাতে তাদের ভাবনাচিন্তা পরিবর্তিত হয়।” তাঁর মতে, বিলকিস বানোর ধর্ষকরা সংশোধিত হয়ে গিয়েছে বলেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
২০০২ সালে সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাট জুড়ে। সেই সময়েই ২১ বছর বয়সি তরুণী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করা হয়। ঘটনার সময়ে গর্ভবতী ছিলেন বিলকিস। দাঙ্গার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর তিন সন্তানকেও খুন করা হয়। ২০০৮ সালে এগারোজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। তাদের মধ্যে ছিলেন দু’জন চিকিৎসক, যারা প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল। একই অপরাধে কয়েকজন পুলিশকর্মীকেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। মেয়াদ ফুরনোর আগেই তাদের মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। যাকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.