সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুলাম নবি আজাদ (Ghulam Nabi Azad)। মাস চারেক আগেও জাতীয় রাজনীতির প্রথম সারির মুখ ছিলেন। অথচ এই চারমাসের ব্যবধানে তাঁর নাম প্রায় ভুলতে বসেছে রাজনৈতিক মহল। জাতীয় রাজনীতির আঙিনায় তো বটেই, কাশ্মীরের রাজনীতিতেও ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছেন ‘আজাদ সাহাব।’ একে একে তাঁর সঙ্গ ছাড়ছেন অনুগামীরাও। স্রেফ গত এক সপ্তাহে আজাদের নতুন দল ছেড়ে কংগ্রেসে ফেরার প্রস্তুতি শুরু করেছেন শতাধিক নেতা। তাঁরা প্রত্যেকেই বলছেন আজাদের সঙ্গে দল ছাড়াটা তাঁদের মারাত্মক ভুল ছিল।
আগস্টে কংগ্রেস (Congress) নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক চিঠি লিখে দল ছাড়ান আজাদ। তারপর কাশ্মীরে নিজের আলাদা রাজনৈতিক দল গড়েন তিনি। নাম দিয়েছিলেন ডেমোক্র্যাটিক আজাদ পার্টি (DAP)। জম্মু এবং কাশ্মীরের বেশ কিছু কংগ্রেস নেতা যোগ দিয়েছিলেন আজাদের সঙ্গে। নিজে কাশ্মীর ঘুরে ঘুরে জনসমর্থন জোগাড় করার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু তাতে বিশেষ সাফল্য আসেনি। আজাদ এখন নিঃসঙ্গ। দলের অন্দরে তাঁর বিরুদ্ধে বাড়ছে বিদ্রোহীর সংখ্যা। একে একে দল ছাড়ছেন অনুগামীরাও।
আসলে আজাদের দলে ঝামেলার সূত্রপাত ডেমোক্র্যাটিক আজাদ পার্টির রাজ্য সভাপতি নিয়োগ নিয়ে। আজাদের মনোনীত রাজ্য সভাপতিকে মানতে না পেরে দলের অন্দরে বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন কাশ্মীরের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা তারা চাঁদ (Tara Chand), প্রাক্তন মন্ত্রী মনোহরলাল শর্মা এবং প্রাক্তন বিধায়ক মনোহর লাল শর্মা। অভিযোগ ফের কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন তাঁরা। এরা তিনজনই ছিলেন আজাদের দলের সবচেয়ে বড় স্তম্ভ। আজাদ এদের তিনজনকেই দল থেকে বরখাস্ত করেন। তাতেই তাঁর দলে বিক্ষোভ চরম আকার নেয়। একে একে দল ছাড়েন শতাধিক পদাধিকারী। এই মুহূর্তে কাশ্মীরের অনেক জেলাতেই আজাদের দলের জেলা সভাপতি পর্যন্ত নেই।
বিদ্রোহীরা বলছেন, আজাদ যখন কংগ্রেস ছাড়লেন তখন সহমর্মিতা থেকে আমরা তাঁর পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু তিনি যেভাবে দলের অন্দরে একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন, সেটা মেনে নেওয়া যায় না। কংগ্রেসে (Congress) থাকাকালীন তিনি দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। জি-২৩ গ্রুপ তৈরি করেন, তাও কংগ্রেস তাঁকে বরখাস্ত করেননি। কারণ কংগ্রেসের অন্দরে গণতন্ত্র আছে। অথচ আজাদ সাহেব নিজে একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন। দলত্যাগীরা জানিয়েছেন, তারা ধর্মনিরপেক্ষ দলে থাকতে চান। রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রাতেও যোগ দেবেন বিক্ষুব্ধ আজাদ ঘনিষ্ঠরা। তাঁদের কংগ্রেসে যোগদান শুধু সময়ের অপেক্ষা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.