সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার (Coronavirus) প্রকোপ কমাতে টিকাকরণের (Vaccination) গতি যে আরও বাড়ানো দরকার তা বারবার বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেইমতো সরকারি ও বেসরকারি কেন্দ্রে চলছে টিকাকরণ। কিন্তু যদি টিকা নেওয়ার পরে জানা যায়, আদপেই কোভিড টিকা দেওয়া হয়নি! ‘ভুয়ো’ টিকা দিয়ে ঠকানো হয়েছে? এমনই অভিজ্ঞতা মুম্বইয়ের (Mumbai) কান্দিভালি এলাকার এক আবাসনের বাসিন্দাদের। সেখানে ভুয়ো টিকাকরণের শিকার হতে হয়েছে ৩৯০ জনকে!
ঠিক কী হয়েছিল? জানা যাচ্ছে, নিজেকে ‘কোকিলাবেন আম্বানি হাসপাতাল’-এর প্রতিনিধি হিসেবে দাবি করে রাজেশ পাণ্ডে নামের এক ব্যক্তি ওই আবাসন চত্বরে টিকাকরণের ব্যবস্থা করেন। তিনি একা নন, একাজে তাঁকে সাহায্য করেন সঞ্জয় গুপ্তা নামের এক ব্যক্তি। মহেন্দ্র সিং নামের এক ব্যক্তি টিকার দাম সংগ্রহের কাজ করেন। এই তিনজন ছাড়া আরও কেউ এই চক্রে শামিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।একটি টিকার মূল্য ১২৬০ টাকা ধরে সব মিলিয়ে আবাসনের বাসিন্দাদের থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
কিন্তু কী করে বোঝা গেল এই টিকা ভুয়ো? আবাসনের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমার ছেলে ওখান থেকে টিকা নিয়েছে। একটি ডোজের দাম ১২৬০ টাকা। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে আমরা ফোনে কোনও মেসেজ পাইনি। এমনকী, টিকা নেওয়ার সময় কাউকেই ছবি বা ভিডিও তুলতে দেওয়া হয়নি।’’ এখানেই শেষ নয়। টিকা নেওয়ার পর সাধারণত অনেকের মধ্যেই নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কিন্তু এই আবাসনের শ চারেক বাসিন্দার কেউই কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় ভোগেননি। তাছাড়া কাউকে টিকা নেওয়ার সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়নি।
অবশেষে প্রায় সপ্তাহ দুয়েক পরে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। আর তখনই দানা বাঁধতে থাকা সন্দেহ আরও প্রবল আকার ধারণ করে। দেখা যায় সার্টিফিকেটগুলিতে বিভিন্ন হাসপাতালের নাম লেখা। কারওটায় নানাবতী হাসপাতাল তো কারওটায় লাইফলাইন হাসপাতাল। এরপর খোঁজ করতেই সেই সব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় ওই আবাসন চত্বরে কোনও রকম টিকাকরণের সঙ্গে তারা যুক্ত ছিল না। এরপরই পরিষ্কার হয়ে যায় আসল সত্যিটা। বোঝা যায় প্রতারকের পাল্লায় পড়েছেন ওই বাসিন্দারা।
স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও। তাঁদের নেওয়া টিকাটাও ‘ভুয়ো’ নয় তো, এমনই চিন্তা পাক খাচ্ছে তাঁদের মনে। অবিলম্বে প্রশাসন এই ধরনের জালিয়াতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যস্থা নিক ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করুক, উঠছে সেই দাবি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.