ফাইল ছবি।
সোমনাথ রায়, শ্রীনগর: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আদৌ হবে তো? কারগিল থেকে ফেরার পথে শ্রীনগরের এদিক ওদিক ঘুরে ভূস্বর্গের বেশ কিছু সাধারণ মানুষের মুখে শোনা গেল এই প্রশ্ন। তাঁদের এই আশঙ্কার পিছনে রয়েছে গত কয়েক মাসে হঠাৎ করেই অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বেড়ে যাওয়া। চলতি বছরে, বিশেষ করে লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে হঠাৎ করেই জম্মু লাগোয়া সীমান্ত এলাকায় বেড়ে গিয়েছে নাশকতা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত জম্মুতে মোট ৩৩টি সন্ত্রাসবাদের ঘটনা ঘটেছিল। অথচ চলতি বছরে হয়ে গিয়েছে আট-আটটি হানার ঘটনা। যাতে শহিদ হয়েছেন ১১ জওয়ান, আহত ১৮। প্রাণ গিয়েছে ১২ জন সাধারণ মানুষের। এই ঘটনাগুলির জেরেই কপালে ভাঁজ কাশ্মীরিদের।
সংবেদনশীল ও বিতর্কিত বিষয়ে সরাসরি মুখ না খুললেও রাজবাগ এলাকার এক হোটেল মালিক সুফি জান, লাল চকের কাশ্মীরি ওয়াজওয়ানের রেস্তরাঁর মালিক আবু তালহা, ডাল লেকের ধারের কাওয়া বিক্রেতা সফিকুল ইসলাম, ক্যাব চালক দ্রাহুল শেখদের বক্তব্য, হয়তো নির্বাচন এড়াতেই এই ধরনের নাশকতার খবর ‘ছড়ানো’ হচ্ছে। যাতে সর্বোচ্চ আদালতে বর্তমান ঘটনার উদাহরণ দিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন বলতে পারে যে, নিরাপত্তার কারণে জম্মু-কাশ্মীরে এই মুহূর্তে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন জম্মু-কাশ্মীরে কোনও বিধায়ক নেই। আমলাদের কাছে গিয়ে কোনও লাভ হয় না। অন্যায়ভাবে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীরের নাগরিকদের।
সরাসরি এই ধরনের আশঙ্কা না করলেও সাম্প্রতিক লাগাতার নাশকতার ঘটনায় কেন্দ্রের সমালোচনা করতে ছাড়ছে না ভূস্বর্গের মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলি। ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ সভাপতি তথা জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার বক্তব্য, “৩৭০ ধারার জন্যই নাকি জম্মু-কাশ্মীরে হিংসা হত। ২০১৯-এর পর থেকে নাকি শান্তি ফিরেছে। এই তো তার নমুনা।” জম্মু-কাশ্মীরের আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি সভানেত্রী মেহবুবা মুফতির অভিযোগ, “কেন্দ্র সরকার তো কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের ঘরে, জীবনে অনুপ্রবেশ করতে ব্যস্ত। এই সুযোগে জম্মুতে এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে যে, মানুষ ঘরের বাইরে পা রাখতেও ভয় পাচ্ছে।” সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ ইউসুফ তারিগামির প্রশ্ন, “সন্ত্রাসবাদ যখন চরমে ছিল, তখনও জম্মুর এই এলাকাগুলোয় কোনও অশান্তি হয়নি। ৩৭০ তুলে দেওয়ার পর কাশ্মীরও নাকি শান্ত। তাহলে জম্মুর অবস্থা এমন কেন? কেন্দ্রের কাছে, উপরাজ্যপালের কাছে কোনও জবাব আছে?”
এদিকে, লাদাখবাসীর দাবি মেনে কেন্দ্র লাদাখ কর্তৃপক্ষকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সাংবিধানিক সুরক্ষা ও রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ না জানায়, তা হলে স্বাধীনতা দিবস থেকে ২৮ দিন অনশনের হুমকি দিয়েছেন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী সোনম ওয়াংচুক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.