সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা ভোটের আর বেশি বাকি নেই। হঠাৎই নয়া চমক দিল মোদি সরকার। চমক বলতেই হবে কারণ, খানিকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই উচ্চবর্ণের জন্য সংরক্ষণের কথা ঘোষণা করল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সোমবার এই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। বলা হয়েছে, সবর্ণদের জন্য শিক্ষা এবং সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া, সাধারণ শ্রেণির যে কেউ এই সুবিধার আওতায় পড়বেন। কিন্তু দুটি শর্ত, আপনার বার্ষিক আয় হতে হবে ৮ লক্ষ টাকার নিচে। অন্যদিকে, কৃষিজমির পরিমাণ ৫ একরের কম। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে বিস্তর রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়ে গিয়েছে। সরকার পক্ষ বলছে, এই ঘোষণা জনগণের দাবি মেনে, এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে, কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা বলছে, এটা নেহাতই নির্বাচনী গিমিক। ভোটার আগে উচ্চবর্ণের মানুষকে কাছে টানার চেষ্টা। এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলতে থাকবে। কিন্তু প্রশ্ন হল এত বড় ঘোষণার পর আসলে কারা উপকৃত হবেন।
আমাদের দেশে এমনিতে ওবিসি, তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতিদের জন্য পৃথক সংরক্ষণ আছে। যার মোট পরিমাণ ৫০ শতাংশ। সংরক্ষণের আওতায় ছিল না শুধু জেনারেল কাস্ট (উচ্চবর্ণ)। যে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের আওতায় ছিল না, তাতে স্কুল কলেজে ভরতি বা সরকারি চাকরি পেতেন উচ্চবর্ণের প্রার্থীরা। সেখানেও ভাগ বসাতো সংরক্ষণের আওতায় থাকা প্রার্থীরা। নতুন যে সংরক্ষণ আইন আনা হচ্ছে তাতে সেই ৫০ শতাংশ থেকেই ১০ শতাংশ সংরক্ষণ পাবেন আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়ারা।
আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া হিসেবে যাদের ধরা হচ্ছে। তাদের মধ্যে স্থান পাবেন ভারতের প্রায় অধিকাংশ মানুষই । কারণ, বার্ষিক ৮ লক্ষ টাকা রোজগারের যে উর্ধ্বসীমা বেধে দেওয়া হয়েছে তা সম্ভ্রান্ত পরিবার ছাড়া মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। মোদ্দা কথা হল, খাতায় কলমে যে ১০ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলা হচ্ছে তাঁর আওতায় থাকছেন কোটি কোটি মানুষ।
স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, এর মূল উদ্দেশ্য আসলে সাধারণকে সুবিধা দেওয়া নয়, বরং এটা নির্বাচনী চমক। কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভিও সেকথাই বলছেন। তিনি বলেন, যদি সাধারণকে সুবিধা দেওয়াই উদ্দেশ্য হত তাহলে এই প্রস্তাবে অনেক আগেই সম্মতি দিত কেন্দ্র। তাছাড়া আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, যে বিজেপি ইস্তেহারে সংরক্ষণের তীব্র বিরোধিতা করেছিল তারাই আবার সংরক্ষণের পথে হাঁটছে কী উদ্দেশ্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.