সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যন্ত্র যা পারেনি, মানুষ সেই কাজ করে দেখিয়েছে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে। সেই কারণেই ১৬ দিন পর মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক। মানুষের এই জয়গান মনে করাচ্ছে গণসঙ্গীত- “আমি মেশিনের হব প্রতিদ্বন্দ্বী/ জন হেনরি বলে বুক ঠুকে/ স্টিম-ড্রিলের সাথে চলে হাতুড়ির পাল্লা…”। এই সঙ্গে ভূভারত প্রথমবার খোঁজ পেল ভালো গব্বরের। কে গব্বর? সুড়ঙ্গযুদ্ধের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কই বা কী?
গব্বর কে জানার আগে বুঝে নিন, এই যে সাড়ে ষোলো দিন অন্ধকার টানেলে আটকে ছিলেন শ্রমিকরা। এই সময়টায় তাঁদের শারীরিকভাবে তো বটেই, পাশাপাশি মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখাও ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। হাসিমুখে সেই দায়িত্বই পালন করেন গব্বর সিং নেগি। যিনি ১৭ দিন ধরে আটকে থাকা শ্রমিকদেরই একজন।
সিল্কিয়ারা টানেল খননের কাজে গব্বর সিং নেগি ছিলেন সুপারভাইজারের দায়িত্বে। এর আগেও এমন সুড়ঙ্গ-ধসের মুখে পড়েছেন তিনি। তাই নিজের পুরনো অভিজ্ঞতা দিয়েই বাকিদের মনোবল বাড়ানোর কাজ করেছিলেন উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা গব্বর। কার্যত ১৬ দিন ধরে সহকর্মী শ্রমিকদের নেতৃত্ব দেন তিনি। বাইরে যে করছিলেন অস্ট্রিলীয় বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড ডিস্ক।
দুর্ঘটনার মধ্যেই ওয়াকিটকি মারফত সেনা এবং এনডিআরএফ টিমের তরফে আলাদা করে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল গব্বরকে, যাতে উদ্ধারকাজ চলার সময় তিনি ভিতরে সবাইকে হাসিখুশি রাখতে পারেন। একটানা সেই কাজ করে গিয়েছেন গব্বর। শরীর-মন তরতাজা রাখার জন্য নিয়ম করে হাঁটাহাঁটি এবং যোগ ব্যায়ামও করাতেন সঙ্গীদের।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার পর যখন একে একে বের করে আনা হয় শ্রমিকদের, তখনও নিজের কর্তব্য ভুলে যাননি গব্বর। সবার শেষে সুড়ঙ্গ থেকে বের হন তিনি। এই নিয়ে বাকিরা প্রশ্ন করলে গব্বর সাফ জানান, “আমি সবার বড়, সবার শেষে বের হব।” এই সাহস, এই নিঃস্বার্থ অভিভাবকত্ব যন্ত্রের কম্ম নয়, কেবল মানুষই পারে।
এদিকে বুধবার শ্রমিকরা মোটের উপর সুস্থ রয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। তথাপি তাঁদের বায়ু সেনার বিশেষ বিমানে ঋষিকেশের AIIMS হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানে তাদের বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা হবে বলে জানা গিয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই শ্রমিকদের AIIMS হাসপাতাল উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, জানিয়েছে উত্তরাখণ্ড রাজ্য প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.