প্রতীকী ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউটিউব দেখে বাড়িতেই প্রসবের চেষ্টা! আর তাতেই ঘটল বিপত্তি। মৃত্যু হল মায়ের। বাঁচানো যায়নি সদ্যজাত শিশুটিকেও। কাঠগড়ায় মৃতার স্বামী। অভিযোগ, স্ত্রীকে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে চাননি। চেয়েছিলেন বাড়িতেই জন্ম হোক সন্তানের। তিনিই ইউটিউবের ভিডিও দেখে স্ত্রীকে জোর করেন বাড়িতেই প্রসবের জন্য। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে কেরলে (Kerala) তিরুঅনন্তপুরমে। মৃতার নাম শেমিরা বিবি। এর আগে তাঁর তিনবার সি-সেকশন হয়েছিল। বুধবার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে তাঁর স্বামী নায়াসকে। জানা গিয়েছে, শেমিরা অভিযুক্তের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। গত দুই সপ্তাহ ধরে একই বাড়িতে থাকছিলেন নায়াসের প্রথম স্ত্রী। স্বাস্থ্যকর্মীদের বক্তব্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ প্রসব বেদনা ওঠে শেমিরার। শুরু হয় রক্তক্ষরণ। কিন্তু প্রথমে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অস্বীকার করেন নায়াস। তাঁর প্রথম স্ত্রীই বাড়িতেই শেমিরার প্রসবের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তা সফল হয়নি। শেমিরার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে, পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে স্ত্রীকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান নায়াস। সেখানে মা ও সদ্যজাতকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এবিষয়ে, তিরুবনন্তপুরম পুরসভার কাউন্সিলর ইউ দীপিকা বলেন, নায়াস তাঁর স্ত্রীকে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার বিপক্ষে ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, কয়েকদিন আগেই আশাকর্মীরা অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়েছিলেন। শেমিরার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দেননি নায়াস। তাঁর দাবি ছিল, বাড়িতেই ইউটিউব ভিডিও দেখে সন্তান প্রসব সম্ভব। তখন তাঁকে আশাকর্মীরা বোঝাতে চেষ্টা করেন, শেমিরার তিনবার সি-সেকশন হয়েছে। এইবার নর্মাল ডেলিভারি সম্ভব নয়। কিন্তু তা মানতে চাননি নায়াস। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতে চেয়েছিলেন শেমিরা। কিন্তু কথা না শুনলে তাঁকে ত্যাগ করার হুমকি দিয়েছিলেন নায়াস বলেও অভিযোগ। ফলে ভয়ে স্বামীর সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য হন মৃতা।
এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “যা ঘটেছে তা গুরুতর অপরাধ। ঘটনাটি মর্মান্তিক এবং এটা হত্যাকাণ্ড। মা ও শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় কেরলে ঘটা কাম্য নয়। এখানে মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে সবসময় আগ্রহী।” পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক দাঁড়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রজু করা হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তের প্রথম স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.