সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। এমন নৃশংস অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের মুক্তি কেন? সরব হয়েছে বিরোধীরা। এবার আসরে নামলেন প্রাক্তন আমলারাও। সদ্য শপথ নেওয়া প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতকে (U U Lalit) একটি চিঠি লিখে ১৩০ জনের বেশি প্রাক্তন আমলা দাবি করলেন, বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া ভয়ংকর ভুল। দেশের একটা বড় অংশ এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। দ্রুত এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে পদক্ষেপ করুক সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।
যে ১৩০ জন আমলা এই চিঠিটি লিখেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন দিল্লির প্রাক্তন উপরাজ্যপাল নাজিব জঙ্গ, মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সচিব কে এম চন্দ্রশেখর, প্রাক্তন বিদেশ সচিব শিবশঙ্কর মেনন ও সুজাতা সিং, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব জিকে পিল্লাই। চিঠিতে প্রাক্তন আমলারা বলছেন, “দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষের মতো গুজরাটে (Gujarat) যেটা হয়েছে সেটা দেখে আমরা স্তম্ভিত।” আমলারা চিঠিতে বলছেন,”আমরা আপনাকে চিঠিটি লিখছি, কারণ সুপ্রিম কোর্টের হাতেই বিচারব্যবস্থায় সর্বোচ্চ দায়িত্ব ন্যস্ত। তাই এই ভুল শুধরে দেওয়ার দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টেরই।”
প্রসঙ্গত, বিলকিসের (Bilkis Bano) ধর্ষকদের মুক্তির প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই একটি মামলা হয়েছে। যার প্রথম শুনানিতে সদ্যপ্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এনভি রামানার বেঞ্চ গুজরাট সরকারকে নোটিস দিয়েছে। বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি আদৌ আইন মেনে হয়েছে কিনা, গুজরাট সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে হলফনামা পেশ করতে হবে গুজরাটের বিজেপি সরকারকে।
২০০২ সালে সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাট জুড়ে। সেই সময়েই ২১ বছর বয়সি তরুণী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করা হয়। ঘটনার সময়ে গর্ভবতী ছিলেন বিলকিস। দাঙ্গার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর তিন সন্তানকেও খুন করা হয়। ২০০৮ সালে এগারোজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। তাদের মধ্যে ছিলেন দু’জন চিকিৎসক, যারা প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল। একই অপরাধে কয়েকজন পুলিশকর্মীকেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। মেয়াদ ফুরনোর আগেই তাদের মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। যা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.