সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির টেলিকম স্টার্টআপ জিও ভারতের বেসিক ফোর-জি ফিচার ফোনের বাজার ধরতে ঝাঁপিয়েছে। ইতিমধ্যেই জিও-র ফোর-জি ফোন, জিওফোন কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন লাখো অনুরাগী। কিন্তু জানেন কি, এক একটি জিওফোন তৈরিতে খরচ হচ্ছে প্রায় ২৫০০ টাকা। কিন্তু হ্যান্ডসেটটি বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫০০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতিটি হ্যান্ডসেট বিক্রিতে জিও-র প্রায় ১ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে। তাহলে কেন মুকেশ আম্বানি এত সস্তায় সাধারণ মানুষের হাতে জিওফোন তুলে দিচ্ছেন? এই নিয়ে কী বলছেন টেলিকম বিশেষজ্ঞরা?
দুটি পৃথক সূত্রকে উদ্ধৃত করে একটি শীর্ষ সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, এক একটি জিওফোন বিক্রিতে যে বিপুল পরিমাণ টাকা লোকসান হচ্ছে সেটাকে বিনিয়োগ হিসাবে দেখছেন আম্বানিরা। এই টাকাকে বিনিয়োগ হিসাবে ধরছে জিও। ক্ষতির অঙ্ক তুলতে পাখির চোখ করা হয়েছে ডেটা কানেকশনকে। রিলায়েন্সের নজরে এই মুহূর্তে দেশের প্রায় ৫০ কোটি মানুষ, যাঁরা স্মার্টফোন কিনতে পারেন না। তাঁদের কী করে ফোর-জি হ্যান্ডসেট ব্যবহারে আগ্রহী করে তোলা যায়, সেদিকেই এখন নজর জিও-র। নতুন ফোর-জি ফিচার ফোনে মিলবে আজীবন ফ্রি ভয়েস কল। এতে রয়েছে ভয়েস কমান্ড ফিচার। অর্থাৎ, ফোনটি আপনার গলার স্বরের নির্দেশ মোতাবেক চলবে। আইফোন সিরি বা গুগল ভয়েস সার্চ যেভাবে কাজ করে, নতুন জিও ফোনও সেভাবেই কাজ করবে। সেই সঙ্গে এই ফোনে মিলবে আনলিমিটেড ডেটা।
এই নিয়ে একটি পরিষ্কার হিসাব দিচ্ছেন টেলিকম ইন্ডাস্ট্রির কর্তারা। ভারতে একজন ফিচার ফোন ইউজার গড়ে তাঁর ফোনের পিছনে ৫০ টাকা করে খরচ করেন। সেখানে জিও VoLTE নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে হলে একজন ইউজারকে প্রতি মাসে অন্তত ১৫৩ টাকা করে খরচ করতে হবে। এই অঙ্কের ফারাকের উপরেই বাজি ধরেছেন কোটিপতি মুকেশ আম্বানি। আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে তিনি ফোর-জি ফোনের বাজারে টেনে আনতে চান। আর তাই আপাতত লোকসানে ফোন বিক্রি করলেও বেশি সংখ্যক গ্রাহককে বাজারে এনে দেশের ফোর-জির বাজারে একাধিপত্য স্থাপন করতে চান আম্বানি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনিতেই জিও এসে যাওয়ার পর ভারতের টেলিকম মার্কেটে প্রতিযোগিতা দাঁড়িয়েছে মূলত তিনটি সংস্থার মধ্যেই। জিও, ভারতী এয়ারটেল ও ভোডাফোন। চিন থেকে সস্তায় হ্যান্ডসেট আমদানি করে আপাতত অন্যান্য প্রতিযোগিদের অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে জিও। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত জিও-র গ্রাহক সংখ্যা ১২ কোটি ছাড়িয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.