নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: মোদি জমানায় নজিরবিহীন ঘটনা। এতদিন এত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে উত্তাল হয়েছে দিল্লির (Delhi) রাজনীতির অলিন্দ, কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সামনে পথরোধ করে ধরনায় বসেছেন কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা – এমনটা হয়নি। অথচ ত্রিপুরায় তৃণমূলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেই বেনজির ঘটনার সাক্ষী রইল জাতীয় রাজনীতি। অমিত শাহর (Amit Shah) সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ে মন্ত্রকের সামনে ধরনায় বসলেন তৃণমূল সাংসদ (TMC MP) সুখেন্দুশেখর রায়, সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা সাহা, ডেরেক ও ব্রায়েন, দোলা সেন-সহ ১৬ জন। দাবি একটাই, অমিত শাহ তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করা পর্যন্ত কিছুতেই ধরনা প্রত্যাহার করা হবে না।
প্রত্যাশিতভাবেই ত্রিপুরায় (Tripura) রাজনৈতিক অশান্তির আঁচ পৌঁছে গিয়েছে দিল্লিতে। সোমবার তৃণমূলের একাধিক কর্মসূচি নির্ধারিত ছিলই। তবে পরিস্থিতি সাপেক্ষে তাতে সংযোজন হয়েছে কিছু। ত্রিপুরা নিয়ে রাষ্ট্রপতির দরবারে যাওয়ার পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করতে চান। কিন্তু এদিন সকাল থেকে আবেদন করেও অমিত শাহর সময় মেলেনি বলে অভিযোগ। সেই কারণে তাঁর দপ্তরের সামনেই প্রতিবাদ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূলের সংসদীয় দল। শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে রবিবার রাতের মধ্যেই দিল্লি পৌঁছেছিলেন দলের সব সাংসদ। তাঁরাই নানা ভাগে বিভক্ত হয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
নর্থ ব্লক (North Block) অর্থাৎ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কার্যালয়ের সামনে বসে তৃণমূল সাংসদরা বিজেপি-বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়রা ‘খেলা হবে’ স্লোগানে মুখর হন। নানারকম রাজনৈতিক কর্মসূচির সাক্ষী থেকেছে রাজধানী। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সামনে ধরনা স্মরণকালের মধ্যে দেখেনি দিল্লি। সেই নিরিখে বিচার করলে এ নজিরবিহীনই বটে! এই বিক্ষোভকারী সাংসদদের দলে রয়েছেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডলও। যিনি উনিশের লোকসভা ভোটে দলবদলের পর বিজেপি প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল শিবিরে না ফিরলেও নিজেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সৈনিক বলেই দাবি করেন। ফলে এই বিক্ষোভে তাঁর উপস্থিতি তাৎপর্যপূর্ণ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়ের সামনে নজিরবিহীন এই ধরনায় নিরাপত্তা বলয় আরও আঁটসাঁট হয়েছে।
তৃণমূল সাংসদদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে, ত্রিপুরার ঘটনার নিন্দা করেছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ আনন্দ শর্মা। সেদিক থেকে এই ইস্যুতে প্রথম অন্য কোনও দলের সমর্থন পেল তৃণমূল।
Condemning the arrest of Syani Ghosh and the police repression let loose on the political opponents and Trinamool leaders in Tripura. Abuse of power and misuse of laws to silence opposition is unacceptable in democracy.
— Anand Sharma (@AnandSharmaINC) November 22, 2021
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.