সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি দেশভক্ত। নয়নে বঙ্কিম দৃষ্টি। অধরে মৃদু কটাক্ষের হাসি। এই নিয়েই গোটা দেশকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, দেশভক্তির অর্থ ঠিক কী। যে যাই বলুন, বাবা রামদেবের পতঞ্জলীর প্রোডাক্ট কেনা আর দেশকে ভালবাসা যে এক, তা এই পোড়া দেশের অধিবাসীদের সফল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বোঝাতে পেরেছেন তিনি। তাতেই বাজিমাত। তাবড় কোম্পানিকে টেক্কা দিয়ে ফুলে ফেঁপে উঠেছে তাঁর সংস্থা। এহেন দেশভক্ত বাবাই কিনা অসমের বন্যাত্রাণে পাঠালেন মেয়াদ উত্তীর্ণ সামগ্রী! দেশভক্তির কড়া প্যাকেজিংয়ের ছাল ছাড়ালে উঠে আসছে এরকমই নির্ভেজাল সত্যি।
[ গোমাংস ভক্ষণ করে হেনস্তার শিকার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী ]
বন্যায় এবার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসম। যদিও কেন্দ্রের নজর পড়েছে অনেক দেরিতে। গুজরাটের দিকে সুনজরে দিতে গিয়ে প্রায় ভেসে গিয়েছে অসম। তবে দেরিতে হলেও শেষমেশ সাহায্য মিলেছে। কিন্তু কেন্দ্রের নজর না পড়লেও বাবা রামদেবের নজর পড়েছে। প্রায় ১২ লক্ষ টাকার সামগ্রী তিনি পাঠিয়েছিলেন অসমের বন্যাত্রাণে। কিন্তু এই দারুণ দেশভক্তির কাহিনিতে ছোট্ট একটা টুইস্ট আছে। যা পাঠানো হয়েছিল তার প্রায় সবটাই মেয়াদ উত্তীর্ণ বা উত্তীর্ণ হওয়ার কাছাকাছি চলে এসেছে। যতদিনে তা বিতরিত হয়েছে ততদিনে তা আর ব্যবহারের যোগ্য নেই। গুঁড়ো দুধের প্যাকেট থেকে ফলের জুসের মতো সামগ্রী পাঠানো হয়েছিল। কোনও কোনওটির তো আবার বছরখানেক আগেই মেয়াদ পেরিয়েছে। এরকম জিনিস হাতে পেয়ে স্বভাবতই ক্ষিপ্ত সাধারণ মানুষ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিতও হয়।
তা সত্যিই কি এরকমটা হয়েছে? পতঞ্জলির মাজুলি জেলার প্রধান রোহিত বড়ুয়া আমতা আমতা করে হলেও এ সত্যি স্বীকার করে নিয়েছেন এক সংবাদমাধ্যমের কাছে। জানাচ্ছেন মেয়াদ ফুরনোর কাছাকাছি সামগ্রীই পাঠানো হয়েছিল। যদিও তাঁর সাফাই সংস্থার গোচরে ছিল না পুরো ব্যাপারটা। বন্যার জন্য তাড়াহুড়োয় জিনিস দেওয়া হয়েছিল। যখন স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সরব হয় তখনই তা নজরে আসে। ঘটনায় বেশ ক্ষুব্ধ জেলাশাসকও। নজরে আসা মাত্র এই ধরনের সামগ্রী যাতে বিতরিত না হয় তার ব্যবস্থা করেছেন। এবং বিতরণ ও অসুস্থ হয়ে পড়ার যে রিপোর্ট আসছে তার তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
[ ‘বাবা’র ডেরায় কমান্ডোদের ম্যারাথন তল্লাশি, উদ্ধার কয়েকশো সাধ্বীর কঙ্কাল ]
পতঞ্জলীর মুখপাত্র অবশ্য বলছেন এরকম কোনও কাজ তাঁরা করতেই পারেন না। মানবিক কারণে যে জিনিস দেওয়া হয়েছে তা খারাপ হতে পারে না। কিন্তু নমুনা যে অন্য কথা বলছে। তবে কি বাবার তথাকথিত দেশভক্তির মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়েছে? প্রশ্ন গোপন থাকছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.