সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেলবন্দি ডেরা সাচা সওদার প্রধান গুরমিত রাম রহিমের পালিতা কন্যা হানিপ্রীতের সামনে নয়া বিপদ! হানিপ্রীত খুন হয়ে যেতে পারেন বলে সতর্কতা জারি করলেন হরিয়ানা পুলিশের গোয়েন্দারা। ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট মোতাবেক, হানিপ্রীতকে খুন করতে সুপারি কিলার ভাড়া করেছে গুরমিতের ঘনিষ্ঠরাই।
কিন্তু নিজের ‘কন্যা’কে কেন খুন করতে উদ্যত হয়েছে ধর্ষক বাবা? গোয়েন্দাদের মতে, ডেরার ভিতরে কী কী অবৈধ কাজ চলত, গুরমিতের পর তা সবচেয়ে ভাল জানেন তার ‘অ্যাঞ্জেল’ কন্যাই। শুক্রবার থেকে সিরসায় ডেরার আশ্রমের সদর দপ্তরে ম্যারাথন তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ও সেনা। তল্লাশিতে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। ডেরার আশ্রম থেকে উদ্ধার হয়েছে সাধ্বীদের কঙ্কাল, পৃথক মুদ্রা, ব্র্যান্ডের নাম ছাড়া ওষুধ, নম্বরপ্লেট ছাড়া গাড়ি-সহ আরও অন্যান্য বিলাসবহুল সামগ্রী। ‘বাবা’র দুর্নীতি শিকড় থেকে উপড়ে ফেলতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নেমেছে প্রশাসন।
আর ঠিক এই ভয়েই ধর্ষক ‘বাবা’ ও তার ঘনিষ্ঠরা চাইছে, হানিপ্রীতকে যে কোনও উপায়ে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে। কারণ, পুলিশ হন্যে হয়ে হানিপ্রীতকে খুঁজছে। তাঁর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি হয়েছে। যে কোনও দিন তাঁকে গ্রেপ্তার করে ফেলবে পুলিশ। পুলিশের জেরায় মুখ খুললে ভণ্ড ‘বাবা’ আরও বিপদে পড়তে পারে। হানিপ্রীতকে শেষবার রোহতকে দেখা গিয়েছিল গত ২৫ আগস্ট। গুরমিতের সঙ্গে দেখা করতে সুনারিয়া জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। ওই আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর এক ডেরা অনুগামীর বাইকে চেপে হানিপ্রীত তল্লাট ছাড়েন। তারপর থেকে আর তাঁর দেখা নেই। গোয়েন্দাদের অনুমান, হানিপ্রীত নেপালে গা ঢাকা দিয়েছেন। যদিও আর একটি সূত্রের খবর, হানিপ্রীত মুম্বই পুলিশের হাতে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ সে কথা স্বীকার করছে না সম্ভবত। হানিপ্রীতকে জেরা করে ডেরার সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য জানার পরই পুলিশ সে কথা স্বীকার করবে বলে জানাচ্ছে ওই সূত্র।
এদিকে, সময় যত গড়াচ্ছে, ততই গুরমিতের সঙ্গে তার দত্তক কন্যা হানিপ্রীতকে নিয়ে নিত্যনতুন বিতর্কিত তথ্য উঠে আসছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, দুই মহিলাকে ধর্ষণের দোষে আদালত গুরমিতকে শাস্তি দিচ্ছে শুনেই তাকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন হানিপ্রীত। তাঁর বিরুদ্ধে হরিয়ানা পুলিশ লুকআউট নোটিস জারি করে। হানিপ্রীতের সঙ্গে রাম রহিমের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন খোদ তাঁর স্বামী। অভিযোগ, তিনি দুজনকে একসঙ্গে উলঙ্গ অবস্থায় দেখতে পেয়েছেন রাম রহিমের গোপন গুহায়। অবশ্য ‘বাবা’র মতো মেয়েও আদালতকে আরজি জানান, তাদের একসঙ্গে থাকতে দেওয়া হোক। আইনজীবীর মাধ্যমে হানিপ্রীত একটি পিটিশনও জমা দেন, যদিও আদালত সেই দাবি গ্রাহ্য করেনি। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের কাছে ‘বাবা’ আরজি জানায়, ‘হানিপ্রীতকে আমার সঙ্গে থাকতে দিন।’ রাম রহিমের বক্তব্য, ‘ও আমার বিশেষ খেয়াল রাখে। ও আমাকে বিশেষ ম্যাসাজ করে দেয়। ফিজিওথেরাপিতে ওর দখল রয়েছে। ও ম্যাসাজ না করে দিলে আমি মরে যাব।’ যদিও আদালত গুরমিতের এই দাবিতে কোনও গুরুত্ব দেয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.