Advertisement
Advertisement

পাপোশ তৈরির কাজ এড়াতে মাটিতে শুয়ে নাটক ধর্ষক ‘বাবা’র

‘বাবা’র সঙ্গে দেখা করার বায়না জুড়ে জেলের বাইরে এসি গাড়িতে ধরনায় হানিপ্রীত।

Ram Rahim refuses to work, creates ruckus in jail
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 30, 2017 10:16 am
  • Updated:October 2, 2019 12:22 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেল নয়, রীতিমতো রঙ্গমঞ্চ। ধর্ষক ‘বাবা’ গুরমিত রাম রহিম রোহতকের সুনারিয়া জেলে আসার পর থেকে যেন বিনোদনের নানা রসদ জুগিয়ে যাচ্ছে। পাপোশ তৈরির কাজে ফাঁকি দেওয়ার জন্য অসুস্থতার ভান করছে। কাজ না করার জন্য মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে অজ্ঞান হওয়ার নাটক করার অভিযোগ উঠেছে। খেপে গিয়ে আবার মাঝে মাঝেই উচ্চপদস্থ কারা-কর্তাদের শাপ-শাপান্ত করছে ডেরা সাচা সৌদার প্রধান।

এদিকে জেলের কাছাকাছি একটি বিলাসবহুল বাড়িতে গুরমিতের পালিতা কন্যা হানিপ্রীত ইনসান থাকছেন বলে খবর। হানিপ্রীতের সঙ্গে গুরমিতের বিশেষ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে নানা মহলে মুখরোচক খবর শোনা যাচ্ছে। গুরমিত দুই সাধ্বী ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর থেকে ডেরার অনেকেই তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলাখুলি কথা বলছেন। সুনারিয়া জেলের এক কারারক্ষী জানিয়েছেন, গুরমিতের সঙ্গে একই কুঠুরিতে থাকতে চেয়ে রোজই ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেলের মূল ফটকের বাইরে বসে থাকছেন হানিপ্রীত। তিনি হুমকি দিয়ে জানিয়েছেন, অসুস্থ ‘বাবা’র ব্যথা নিরাময়ের জন্য বিশেষ উপায়ে চিকিৎসা করে দেন। সেই চিকিৎসা সময়মতো না পেলে গুরমিতের শরীর আরও খারাপ হবে। আর এমন হলে ‘বাবা’র ভক্তরা জেলে চড়াও হয়ে তাকে বের করে নিয়ে যাবে।

Advertisement

[কয়েকশো সাধ্বীকে ধর্ষণ করেছে রাম রহিম, ফাঁস করলেন প্রাক্তন দেহরক্ষী]

এদিকে জেলের যেখানে বন্দিদের নানা কাজ করতে হয় সেই জায়গায় গিয়ে গুরমিত রাম রহিমকে পাপোশ তৈরি করতে বলা হলে সে রাজি হয়নি। তারপর শুরু হয় দফায় দফায় নাটক। প্রতি মুহূর্তে গুরমিতের নাটক দেখে হেসে গড়িয়ে পড়ছেন সহ-বন্দিরা। বন্দিদের কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে ভগবানের বাণীও শোনাচ্ছে গুরমিত। তার এই বালখিল্য আচরণ বন্ধ করতে গিয়ে নাজেহাল এখন দশা কারা-কর্তাদের। মঙ্গলবার সুনারিয়া জেলে গুরমিতের প্রতি বিশেষ নজর রাখার দায়িত্বে থাকা এক কারা-অফিসার ডিউটি থেকে ফিরে তাঁর ঘনিষ্ঠদের বলেন, ‘বাবাজিকে নিয়ে আর পারা যাচ্ছে না। জেলের ভিতরে ননস্টপ নাটক করে চলেছে ওই ধর্ষক ‘বাবা’। কোনও কাজ করছে না। তাকে পাপোশ তৈরি করতে বললেই অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ভান করছে। কারা-কর্তারা কাজ করার জন্য জোর করলে তাদের অভিশাপ দিচ্ছে।’

মাত্র দু’দিনেই কয়েদি নম্বর ১৯৯৭-কে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত সুনারিয়া জেলের আধিকারিকরা। যদিও মহিলা কারা-রক্ষীরা তাঁর কুঠুরির দিকে যাচ্ছেন না বলে খবর। গুরমিতের সাজা হলেও ভিতরে ভিতরে তিনি এখনও কতটা প্রভাবশালী তা তার চাল-চলনে ধরতে পারছেন কারা-কর্মীরা। তাই কেউই তাকে বাগে আনতে পারছে না।

[অপারেশন থিয়েটারেই চিকিৎসকদের বচসা, মৃত্যু সদ্যোজাতর]

এক অফিসারের কথায়, বন্দিদের কাজের সময় শেষ হয়ে গেলেই দিব্যি সুস্থ হয়ে বসে থাকছে গুরমিত। তবে এখনও পর্যন্ত জেলের খাবার মুখে তোলেনি। দুধ, তরল জাতীয় খাবার খেয়েই চলছে। প্রথমদিন ঘুপচি কুঠুরিতে কারও সঙ্গে কথা বলেনি। তারপর কাজ করতে দেওয়া হলেই নানা নাটক। মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার অভিনয়ও চলছে। এর মধ্যেই কয়েকজন সহবন্দিকে ভক্ত হিসাবে জুটিয়ে ফেলেছে রাম রহিম। কারা-কর্মীদের আশঙ্কা, জেলের ভিতরেই গুরমিত অনুগামী তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।

২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত গুরমিতকে জেলে কোন কাজ দেওয়া হবে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করেন জেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা। কাঠের জিনিস, কুটির শিল্পের সামগ্রী বা অন্য কায়িক পরিশ্রমের কোন কোন কাজে ওই ভণ্ড গুরু দক্ষ হতে পারে তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর গুরমিতকে পাপোশ তৈরির কাজ দেওয়া হয়েছে। তাকে কারাগারের লাইব্রেরির কাজ দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছিল। তবে পাপোশ তৈরির কাজে হাত পাকালে ‘বাবাজি’কে ফের অন্য কাজ দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে সঠিকভাবে কাজ করতে পারলে এইসব কাজের জন্য পারিশ্রমিকও মিলবে।

[শিমলা গণধর্ষণ মামলায় আইজি-সহ গ্রেপ্তার ৮ পুলিশ আধিকারিক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement