সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংঘাতের আবহে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। মস্কোয় ভারত ও চিনের (China) প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সেই বৈঠক ঘিরে জল্পনাও ছিল তুঙ্গে। শেষপর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টার দ্বিপাক্ষিক ম্যারাথন বৈঠকে সীমান্তে শান্তি ফেরানোর ইঙ্গিত মেলে। দু’পক্ষই লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (PLA) বরাবর স্থিতাবস্থা জারি রাখার বিষয়ে সহমত হয়েছে। তবে কীভাবে সমস্যা মিটবে তা নিয়ে এদিনও কোনও রফাসূত্র মেলেনি বলেই খবর। প্রসঙ্গত, সংঘাতের আবহে এই প্রথম এত উচ্চপর্যায়ের কোনও বৈঠক অনুষ্ঠিত হল।
বুধবার মস্কোয় গিয়েছেন রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)। শুক্রবার সেখানে শুরু হওয়া সাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশনের (SCO) বৈঠকে অংশ নেন। এই বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওয়ে ফ্যাং-ও। এর মাঝেই ভারতের সঙ্গে তৈরি হওয়া ক্ষতে মলম লাগাতে রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে চিনের বিদেশমন্ত্রী চান ফ্যাং। দু’পক্ষের মধ্যে বৈঠকও হয়। ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ এই হাই ভোল্টেজ বৈঠক শুরু হয়। রাজনাথের সঙ্গে ছিলেন রাশিয়ায় ভারতের রাষ্ট্রদূত ডিবি ভেঙ্কটেশ ভার্মা এবং প্রতিরক্ষা সচিব অজয় কুমার।
Defence Minister Rajnath Singh meeting the Chinese Defence Minister, General Fenghe in Moscow: Office of the Defence Minister pic.twitter.com/ldX5slo5Jw
— ANI (@ANI) September 4, 2020
সূত্রের খবর, বৈঠকে ভারতের তরফে পূর্ব লাদাখে প্যাংগং লেকের (Pangong Tso) দক্ষিণ অংশে ফের নতুন করে চিনা অনুপ্রবেশের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। আলোচনার মধ্যে দিয়েই এই সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার দাবিও তোলে ভারত। ভারতের পূর্বের স্থিতাবস্থা রক্ষার চাপে কার্যত চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী নতিস্বীকার করেন বলেও সূত্রের খবর। যদিও অন্য একটি সূত্রে দাবি, লাদাখে অশান্তির দায় ভারতের ঘাড়েই চাপিয়েছে ড্রাগন। তবে সীমান্তে স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে দিতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তবে বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে সরকারিভাবে কিছুই জানানো হয়নি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বৈঠক শেষে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, “সীমান্তে স্থিতাবস্থা ফেরাতে দুদেশকেই উদ্যোগ নিতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে। দ্রুত সীমান্তের পরিস্থিতি ও সেনাবাহিনীকে পূর্বে অবস্থানে ফেরানো প্রয়োজন।” ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, এর আগেও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাতে রাজি ছিল দুদেশেই। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতিতে বদল আসেনি। সীমান্ত সমস্যা মেটাতে এদিনও কোনও রফাসূত্র মেলেনি বলেই খবর।
বিশ্লেষকদের মতে, চিন-ভারত সংঘাত মেটাতে পর্দার আড়ালে থেকে চেষ্টা চালাচ্ছে রাশিয়া। বেজিং আর নয়াদিল্লি দুইয়ের উপরই প্রভাব থাকায় এই কাজে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে মস্কো। আর সাউথ ব্লকও চাইছে রুশ হস্তক্ষেপে বিবাদ মেটাতে। কিন্তু পূর্ব লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে চিনা সেনা না সরায় কড়া অবস্থান নিয়েছে নয়াদিল্লি। সীমান্তে সংঘর্ষের আবহে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নীতি নির্ধারকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.