নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: সাইক্লোন ‘যশ’ বা ‘ইয়াস’ (Cyclone Yaas) পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ডাকা রিভিউ মিটিংয়ে অনুপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে এবার শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির শীর্ষস্তরের নেতারা একযোগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আসরে নামলেন। জেপি নাড্ডা (JP Nadda) থেকে শুরু করে রাজনাথ সিং সকলেরই বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর না থাকাটা দুর্ভাগ্যজনক। মমতা জনসেবার থেকে সংকীর্ণ রাজনীতিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। যদিও তৃণমূল সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর ওই বৈঠকে অনুপস্থিতির পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ ছিল না। সময়ের সমস্যার জন্যই মোদির ডাকা বৈঠকে থাকতে পারেননি তিনি। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় আবার পালটা আক্রমণের পথে হেঁটেছেন। তিনি বলছেন, “অযথা মমতাকে জ্ঞান দেবেন না। পারলে ওঁর থেকে শিখুন।”
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী, নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) এবং খড়গপুরের বিধায়ক হিরণ। শুভেন্দু অধিকারী এবং দেবশ্রী চৌধুরীর (Debashree Chowdhury) ওই বৈঠকে থাকার যৌক্তিকতা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্য। কানাঘুষো ছিল মুখ্যমন্ত্রী ওই বৈঠকে যোগ দেবেন না। বস্তুত, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে দেখা করলেও তাঁর ডাকা রিভিউ মিটিংয়ে যোগ দেননি মুখ্যমন্ত্রী। আর সেটা নিয়েই আক্রমণ শুরু করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
বিজেপির (BJP) সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বলছেন,”যখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে’ ক্ষতিগ্রস্থ বাংলার মানুষের পাশে দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন, তখন মমতাজির উচিত ছিল জনগণের কল্যাণার্থে নিজের অহংকে বিসর্জন দেওয়া। প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে তাঁর অনুপস্থিতি হল সাংবিধানিক নীতি আর সমবায় মৈত্রীতন্ত্রের হত্যা।” একই সুর কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের টুইটেও। তিনি বলছেন,”পশ্চিমবঙ্গের আজকের ঘটনাক্রম চমকে দেওয়ার মতো। মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী কোনও ব্যক্তি নন, সংস্থা। দু’জনেই জনসেবা এবং সংবিধানের প্রতি নিষ্ঠা রাখার শপথ নেন। দুর্যোগের সময় বাংলার মানুষকে সাহায্য করার জন্য প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার যন্ত্রণাদায়ক। সাংবিধানিক কর্তব্যের থেকে সংকীর্ণ রাজনীতিকে উপরে রাখার দুর্ভাগ্যজনক উদাহরণ।” কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন এরাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণে না গিয়েও তিনি বলছেন,”কোনও রকম রাজনৈতিক আক্রমণ ও তর্কের মধ্যে যাব না। আজকের দিনটা হচ্ছে বাংলার সমস্ত মানুষের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কেন্দ্রের কাছ থেকে অর্থ আর সহযোগিতা আদায় করার দিন।” পালটা তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ও। তাঁর বক্তব্য,”তিন সপ্তাহ আগেই বাংলার মানুষ বিজেপিকে ওদের আসল জায়গা দেখিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কিছু মানুষ কিছুতেই শিক্ষা নেয় না। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে হত্যা করার পর ওরা আবার জ্ঞান দিচ্ছে। কিন্তু ওদের মনে রাখা দরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো একপাক্ষিক হতে পারে না। মমতার থেকে শিখুন। জ্ঞান দেবেন না।”
যখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী @narendramodi জী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস’র ক্ষতিগ্রস্থ বাংলার মানুষের পাশে দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন, তখন মমতা জীর উচিত ছিল জনগণের কল্যাণার্থে নিজের অহং-কে বিসর্জন দেওয়া। পিএম এর বৈঠকে তাঁর অনুপস্থিতি হল সাংবিধানিক নীতি আর সমবায় মৈত্রীতন্ত্রের হত্যা।
— Jagat Prakash Nadda (@JPNadda) May 28, 2021
पश्चिम बंगाल का आज का घटनाक्रम स्तब्ध करने वाला है। मुख्यमंत्री व प्रधानमंत्री व्यक्ति नहीं संस्था है। दोनों जन सेवा का संकल्प और संविधान के प्रति निष्ठा की शपथ लेकर दायित्व ग्रहण करते हैं।
— Rajnath Singh (@rajnathsingh) May 28, 2021
যদিও তৃণমূল (TMC) সূত্রের দাবি, আজকের রিভিউ মিটিংয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতির পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ ছিল না। ব্যস্ত কর্মসূচির মধ্যে সাগর থেকে বেরতেই মিনিট কুড়ি দেরি হয়ে যায় মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যমন্ত্রী কলাইকুন্ডা পৌঁছে দেখেন প্রধানমন্ত্রীর ডাকা রিভিউ মিটিং শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁকে বলা হয় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর যেহেতু অন্য কর্মসূচি ছিল, তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে ১৫ মিনিট সময় চেয়ে নেন তিনি। ‘যশে’র ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দিয়েই কলাইকুন্ডা থেকে দিঘা উড়ে যান মমতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.