Advertisement
Advertisement
পরমাণু হুমকি

‘অচিরেই টুকরো হবে পাকিস্তান’, ইমরানের পরমাণু হুমকির পালটা জবাব রাজনাথের

'প্রথাগত যুদ্ধ হলে ভারতের কাছে হেরেই যাব', স্বীকারোক্তি ইমরান খানের।

Rajnath says Pakistan will break into pieces due to its terror-policy
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:September 16, 2019 9:12 am
  • Updated:September 16, 2019 9:12 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বভাবসুলভ ঔদ্ধত্য দেখিয়ে ফের ভারতের বিরুদ্ধে পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আর তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মোক্ষম জবাব দিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও। তবে পরমাণু অস্ত্র দিয়ে পালটা হুমকি নয়। রাজনৈতিক বিচক্ষণতা ও পরিণত বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে রাজনাথ স্পষ্ট জানালেন, তীব্র ধর্মীয় বিদ্বেষ ও ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার কারণেই অদূর ভবিষ্যতে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে পাকিস্তান।

[আরও পড়ুন: মোদিকে বিষধর সাপ উপহারের হুমকি, গ্রেপ্তার জনপ্রিয় পাক অভিনেত্রী]

কাতারভিত্তিক আল জাজিরা চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে শনিবার ইমরান প্রথমে ভারতের সঙ্গে শান্তির কথা বলেন। তারপর বাস্তব মেনে বলেন, প্রথাগত যুদ্ধ হলে হয়তো আমরা ভারতের কাছে হেরেই যাব। এরপরই ধাপ ধাপে সুর চড়িয়ে পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে লম্বা বিবৃতি দেন। প্রথমে বলেন, ‘পাকিস্তান কখনওই যুদ্ধ শুরু করবে না। তাছাড়া এটা পরিষ্কার যে আমি একজন শান্তিবাদী মানুষ, যুদ্ধবিরোধী। আমি বিশ্বাস করি, যুদ্ধ কোনও সমস্যারই সমাধান করতে পারে না।’ এরপর কথা প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে প্রথাগত যুদ্ধে হয়তো আমরা হেরেই যাব। কিন্তু আমি পরিষ্কার মনে করি, দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে প্রথাগত যুদ্ধ হলে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহারের সমূহ সম্ভাবনা থাকে। আল্লা কী কসম সে, আমরা যদি প্রথাগত যুদ্ধে নিশ্চিত হারের মুখে পৌঁছে যাই। যদি পাকিস্তানের সামনে একদিকে আত্মসমর্পণ এবং অন্যদিকে মৃত্যু, এই দুটো বিকল্প খোলা থাকে। তা হলে আমি জানি, পাকিস্তান নিজের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্যই আমৃত্যু লড়াই করবে। আর যখন একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ আমৃত্যু লড়াই করে তখন তার বেশ কিছু প্রভাব তো পড়বেই। কারণ, নিজের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই শেষ উপায় হিসেবে পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করবে। এমন যুদ্ধ হলে তার প্রভাব এই উপমহাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে যাবে।’

Advertisement

এই সাক্ষাৎকারেই ইমরানকে মোক্ষম প্রশ্ন করা হয়, চিন যে কোটি কোটি উইঘুর মুসলমানদের উপর ভয়ংকর অত্যাচার চালাচ্ছে। কোটি কোটি মুসলিমকে ধর্মাচরণ করতে দিচ্ছে না। নিজেদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে কারাগারে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনি চুপ কেন? চিন পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলেই কি আপনি মুখে তালা দিয়েছেন? দৃশ্যত অস্বস্তিতে পড়া ইমরান আগের মতোই প্রশ্নটি মাছি তাড়ানোর ভঙ্গিতে উড়িয়ে দিয়েছেন। কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, কাশ্মীর ইস্যু ও পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা নিয়ে তিনি খুবই ব্যস্ত। তাই সব দেশের সব খবর রাখা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।

[আরও পড়ুন: ‘কাশ্মীর বানেগা হিন্দুস্তান’, ইমরানের সামনেই স্লোগান তুললেন মুজফফরাবাদের বাসিন্দারা]

ইমরানের পরমাণু হুমকির জবাবে রবিবার পালটা টুইট করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে ব্রিটিশরা দেশটাকে দু’টুকরো করেছিল। কিন্তু, ১৯৭১ সালে বিশ্ববাসী দেখতে পেল, ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া পাকিস্তান নিজের দোষেই দু’টুকরো হয়ে গেল। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি পাকিস্তান। ওরা একইরকম ধর্মীয় বিদ্বেষের রাজনীতি করে যাচ্ছে। ধর্মভিত্তিক সন্ত্রাসে মদত দিয়ে যাচ্ছে। এরকম চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে ফের টুকরো টুকরো হবে পাকিস্তান। বিশ্বের কোনও শক্তিই পাকিস্তানকে তখন বাঁচাতে পারবে না।’

কটাক্ষ করে আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী অবশ্য তাঁর নাগরিকদের একটা ভাল পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, তাঁদের দেশের কেউ যেন অতি উৎসাহে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে কাশ্মীরে বা ভারতে ঢোকার চেষ্টা না করে। কারণ, গায়ের জোরে ঢোকার চেষ্টা করলে একজনও বেঁচে ফিরবে না। সীমান্তে ভারতীয় সেনার অতন্দ্র পাহারা রয়েছে।’

তাঁর কথায়, ‘মোহাজির’ একটি চরম অপমানজনক শব্দ। ভারত থেকে যাওয়া মুসলমানদের মোহাজির বানিয়ে রেখে তাদের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করে চলেছে পাকিস্তানের সুন্নি মুসলমানরা। পাকিস্তানে শিখ, হিন্দু, মোহাজির, খ্রিস্টান, বালুচ, হাজারা, শিয়া সম্প্রদায়ের কোটি কোটি মানুষ দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে চরম দুর্দশার মধ্যে বেঁচে রয়েছেন। তখন মানবাধিকারের কথা মনে পড়ে না ইমরানের? উলটোদিকে ভারতে সব ধর্মের মানুষ বিশাল সংখ্যায় একসঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে যুগ যুগ ধরে বাস করছেন। জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে ভারতের সব মানুষ সবরকমের সুযোগ-সুবিধা ও সমানাধিকার ভোগ করেন। এখানে সংখ্যালঘুরাও সমান সম্মান পান। তাই পাকিস্তান আগে নিজেদের সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার দিক। তারপর ভারতের দিকে তাকাবে।’ টুইটের পাশাপাশি সুরাতের এক অনুষ্ঠানে রাজনাথ বলেন, ‘কারগিলের যুদ্ধ থেকে আমরা ঠেকে শিখেছি। পাকিস্তানের কাউকে কোনওরকম মিস অ্যাডভেঞ্চার করতে দেব না।’

রবিবার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমারও পাকিস্তানের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, শুধু ২০১৯ সালেই বিনা প্ররোচনায় ২০৫০ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে গোলাগুলি ছুড়েছে পাকিস্তান। জঙ্গি অনুপ্রবেশ করানোর জন্যই এসব করা হয়েছে। এই হামলাগুলিতে ২১ জন ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার এই নমুনা সব দেশের রাষ্ট্রদূতকেই জানানো হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement