সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha 2024) আবহে ফের উসকে গেল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত রাজনৈতিক বিতর্ক। বৃহস্পতিবার একজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর প্রাণ সংশয়ের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে ইজরায়েল একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট দিয়েছিল ভারতকে। তবে, ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের পর সেই নোটটি আর পাওয়া যায়নি। এই ঘটনাকে দুই দেশের মধ্যে আদানপ্রদান হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা রিপোর্ট ধ্বংস করার রাজনীতির একটি ‘উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত’ হিসাবেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
গোয়েন্দা তথ্য ও গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তা অগ্রাহ্য করে তৎকালীন চন্দ্রশেখর সরকার রাজীবের যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি, এই বিতর্ক তেত্রিশ বছরের পুরনো। সেই বিতর্কটি ফের ফিরে এসেছে। ‘গোয়েন্দা সহযোগিতা এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক আলোচনায় বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ নমিত ভার্মা বলেন, “সাম্প্রতিক ইতিহাসে, গত তিন-চার দশকে, ইজরায়েল আমাদের সঙ্গে যে সমস্ত গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করেছে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর জীবনের সম্ভাব্য হুমকি সংক্রান্ত কিছু কপি। ঘটনাক্রমে, সঙ্গে হুমকিটি সত্যি হয়েছে।” উসানাস ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় ভার্মা বলেন, “প্রতিটি দেশকে প্রতিদিন একে অপরের সঙ্গে কাজ করতে হয়। সে সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যেখানে গোয়েন্দা তথ্যের একটি নির্দিষ্ট অংশ হারিয়ে গিয়েছিল কিংবা সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।”
প্রসঙ্গত, ভার্মা কয়েক দশক ধরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত এবং আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির বিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি নিরাপত্তা এবং বৈদেশিক নীতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, “ভারতে, আমরা অন্যান্য ফাইলে পাওয়া নথি ও চিঠিপত্রের উপর ভিত্তি করে উপাদানটি পুনর্গঠন করেছি। আমরা সেই রিপোর্টের একটি প্রতিলিপি চেয়েছিলাম, কিন্তু ইজরায়েল সেটি কখনওই দেয়নি। দেশগুলির মধ্যে ইন্টেলিজেন্স তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে রাজনীতি কীভাবে চলে তার এর চেয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আর হতে পারে না।” স্মৃতির পাতা থেকে ভার্মা বলেন, ভারত একটি সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে ছিল। তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙেনি। ভারত ছিল আমেরিকা এবং সোভিয়েতের মধ্যে একটি ব্যাকচ্যানেল। রাজীব গান্ধী সেই যোগাযোগের অংশ ছিলেন। যখনই বিশ্বব্যাপী সমীকরণ পাল্টে যাচ্ছে বা বিদ্যমান শৃঙ্খলাকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে, তখনই এই ধরনের ঘটনাটি ঘটেছিল।
ভার্মার আক্ষেপ, “ওই বিশেষ ট্রান্সক্রিপ্টটি স্পষ্টভাবে বলেছে যে অর্থপ্রদান করা হয়েছে… একজন গডম্যান অর্থপ্রদান করেছেন… এর চেয়ে স্পষ্ট আর কী হতে পারে? এই সমস্ত তথ্য সেখানে ছিল এবং আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সে সম্পর্কে সচেতন। তারা নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আর্জিও জানিয়েছিল, যা সেদিনের সরকার প্রদান করেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.