সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ দশকের অপেক্ষার পর বুধবার অযোধ্যায় রাম মন্দির (Ram Mandir) নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাচ্ছে। নিজের হাতে ভূমিপুজো করে মন্দিরের শিলান্যাস করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আপাত দৃষ্টিতে এটি একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও, এর নেপথ্যে যে গভীর রাজনীতি আছে, তা এদেশের সকল রাজনীতি সচেতন মানুষেরই জানা। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ভাবাবেগকে হাতিয়ার করে ভোট ব্যাংক তৈরির লক্ষ্যে মন্দির নির্মাণের কৃতিত্ব নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে। বিজেপি শুরু থেকেই মন্দির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। স্বাভাবিকভাবেই, মন্দির নির্মাণের প্রাথমিক কৃতিত্ব তাদেরই প্রাপ্য। কিন্তু খানিকটা আশ্চর্য হলেও সহসা কংগ্রেসেরও রামভক্তির উদয় হয়েছে। বিজেপিকে একা এই মন্দির নির্মাণের ‘ক্রেডিট’ দিতে নারাজ তাঁরা।
কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর (Rajiv Gandhi ) ঘনিষ্ঠ কমল নাথের দাবি, কংগ্রেস শুরু থেকেই রাম মন্দিরের পক্ষে। রাজীব গান্ধীর আমলেই প্রথমবার মন্দিরের শিলান্যাস হয়। সাধারণ মানুষের জন্য মন্দিরের দরজাও খুলে দিতে চেয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এক সর্বভারতীয় সাক্ষাৎকারে কমল নাথ (kamal Nath) বলেছেন,”আমি শুরু থেকেই বলছি, মন্দির নির্মাণকে সমর্থন করি। ভারতই একমাত্র দেশ যেখানে সবার সম্মতিতে এভাবে মন্দির নির্মাণ সম্ভব। ভুলে গেলে চলবে না যে ১৯৮৬-তে রাম মন্দিরের দরজা কিন্তু রাজীব গান্ধীই খুলেছিলেন। ১৯৮৯ সালেই একরকম ভূমিপুজো হয়ে গিয়েছিল। রাজীব ভোটের প্রচারেও রামরাজ্যকেই স্লোগান করেছিলেন।”
ইতিহাস বলছে, ১৯৮৬ সালে রাজীব গান্ধীর আমলেই প্রথম খোলা হয় বিতর্কিত ইমারতের দরজা। উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর সিংকে ওই নির্মাণের দরজা খোলার জন্য রাজীবই রাজি করান। তখন থেকেই রামলালার দর্শন করার অনুমতি পাওয়া শুরু করে হিন্দুরা। এর আগে ১৯৮৫ সালে রাজীবের অনুরোধেই প্রথমবার দূরদর্শনে দেখানো শুরু হয় রামায়ণ। এরপর ১৯৮৯ সালে নিজের নির্বাচনী প্রচারে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাম মন্দির নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দেন। এবং সে বছরই রাজীব বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে রাম মন্দিরের শিলান্যাসের অনুমতি দেন। ১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর ঐতিহাসিকভাবে রামজন্মভূমির অদূরেই মন্দিরের শিলান্যাস করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সেই অনুষ্ঠানে রাজীব নিজে উপস্থিত না থাকলেও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুটা সিংকে নিজের প্রতিনিধি করে পাঠিয়েছিলেন। যদিও তারপরে আদালতের গেরোয় আর মন্দির নির্মাণের প্রক্রিয়া এগোতে পারেনি। কিন্তু রাজীবের তৎপরতায় যে মন্দিরের প্রথম শিলান্যাস হয়েছিল, তা অস্বীকার করে না হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.