সুব্রত বিশ্বাস: লকডাউনে অর্থ সংকটের মুখে পড়ে কেন্দ্র আয় বাড়াতে নানা পন্থা খুঁজছে। লকডাউনের মধ্যেই খুলে গেছে মদের দোকান। তা শেষ হওয়ার পাঁচ দিন আগেই শুরু হয়ে গেল ট্রেন চলাচল। তবে সাধারণ মানের ট্রেন নয়। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন রাজধানী এক্সপ্রেস প্রথম চলা শুরু করছে আর কিছুক্ষণ বাদেই। আজ থেকে সীমিতভাবে চলবে যাত্রীবাহী ট্রেন। দিল্লি থেকে ১৫টি গুরুত্বপূর্ন শহরের মধ্যে যোগাযোগকারী হিসাবে কাজ করবে এই ট্রেন। এসি স্পেশ্যাল হিসাবে দেখানো হলেও ট্রেনগুলো আদপে রাজধানী এক্সপ্রেস। রাজধানী এক্সপ্রেসের রেকই চলবে। টিকিটের ভাড়া রাজধানীর মতো। যা খোলামাত্র দ্রুত শেষ হয়ে যায়।
এদিকে, চরম সংকটময় মুহূর্তে যখন নানা রাজ্যে এখনও পরিযায়ী শ্রমিকরা আটকে রয়েছেন। জীবন বাজি রেখে লাইন ও সড়কপথে হাঁটতে গিয়ে মারা পড়ছেন। তখন শ্রমিক ট্রেনের সংখ্যা না বাড়িয়ে আয় বাড়াতে দেশের কুলিন ট্রেন চালানোতে সমালোচনা শুরু হয়েছে নানা মহলে। রেল কর্তাদের কথায়, আয়ের পথটাও খোলা রাখতে হবে। পাশাপাশি টিকিট মূল্যবান হওয়ায় সাধারণ মানুষ চলাচলের হ্যাপা পোহাতে হবে না।
মঙ্গলবার বিকেলে পাঁচটার সময় হাওড়া থেকে ছাড়বে এই এসি স্পেশ্যাল ট্রেনটি। লকডাউনে কোনও ট্রেন হাওড়ায় আসেনি, এমনকি যায়ওনি। দীর্ঘদিন বাদে হাওড়া স্টেশন থেকে চলবে যাত্রীবাহী ট্রেন। ফলে স্টেশন থেকে কোচ সানিটাইজ করা হচ্ছে। ট্রেন নিয়ে যাওয়ার জন্যে বুকিং হয়েছে টিকিট পরীক্ষক। স্টেশনে হাজির থাকতে বলা হয়েছে রেলকর্মীদের। যাত্রীদের টিকিট দেখে তবেই ঢুকতে দেওয়া হবে স্টেশনে। থার্মাল স্ক্রিনিং করিয়ে মাস্ক পরে তবেই উঠতে পারবেন ট্রেনে। রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব। রাজধানীর ভাড়া মতো একই ভাড়া ট্রেনটির। রাজধানীর মতো একই স্টপেজ থাকবে। হাওড়ার পর আসানসোল, ধানবাদ, পরেশনাথ, গয়া, দীনদয়াল উপাধ্যায়, প্রয়াগরাজ, কানপুর সেন্ট্রাল, দিল্লি।
ট্রেনগুলিতে যে সব প্রক্রিয়া রয়েছে তা, সাতদিন আগে টিকিট বুকিং করা যাবে, অন লাইনে কাটতে হবে টিকিট, তাৎকাল ব্যবস্থা নেই, আরএসি থাকবে না, যাত্রার ২৪ ঘন্টা আগে টিকিট বাতিল করা যাবে। তবে পঞ্চাশ শতাংশ ভাড়া ফেরত পাওয়া যাবে। ভাড়া রাজধানীর মতো হলেও খাবার মিলবে না । চিপস, সুপের মতো প্যাকেটজাত খাবার দেওয়া হবে। রান্না খাবার দেওয়া হবে না। এদিকে, লকডাউন উপেক্ষা করে যখন পরিষেবা শুরু হল তখন সাধারণ মানুষের কথা না ভেবে ট্রেন চালানোয় শুরু হয়েছে সমালোচনা।
রেল জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত ৪৬৮টি বিশেষ ট্রেন চলেছে। যাতে পরিযায়ী শ্রমিক, পড়ুয়ারা, তীর্থযাত্রীরা ঘরে ফিরতে পেরেছেন। ভাড়ার ৮৫ শতাংশ কেন্দ্র, ১৫ শতাংশ রাজ্য মেটানোর সিদ্ধান্ত হলেও নানা বিতর্কের মাঝে শ্রমিকদেরই শেষ পর্যন্ত ভাড়া দিয়েই টিকিট কেটে ট্রেনে চড়তে হয়েছে। এবার ক্ষতি সামলাতে আয় বাড়ানোর পথ নিয়েছে কেন্দ্র। লকডাউনের মধ্যে আপাতত পনেরোটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী এই এসি এক্সপ্রেস চলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.