সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অতঃপরে তিনদিনের রুদ্ধশ্বাস নাটকের সমাপণ হল! নাকি আরও খানিকটা বাকি আছে? আছে তো বটেই। এখনও তো গেহলট (Ashok Gehlot) সরকারের শক্তিপরীক্ষাই হল না। আসল নাটক তো হবে বিধানসভার অধিবেশনে। তার আগে শচীন পাইলটের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, সেদিকেই নজর গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলের।
শচীনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী?
ইতিমধ্যেই শচীন পাইলটকে (Sachin Pilot) বরখাস্ত করে গোবিন্দ সিং ডোতাসরাকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করে দিয়েছে কংগ্রেস। শচীনও রাগের মাথায় কংগ্রেস ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছেন। টুইটারে নিজের পরিচয় থেকে ‘কংগ্রেস’ শব্দটি সরিয়ে ফেলেছেন তিনি। এখন আর কংগ্রেসে ফেরার রাস্তা নেই। এই ‘অপমানের’ পর তিনি আর ফিরতেও চাইবেন না। এখন পাইলটের কাছে দুটো বিকল্প।
सत्य को परेशान किया जा सकता है पराजित नहीं।
— Sachin Pilot (@SachinPilot) July 14, 2020
এক, সরাসরি বিজেপিতে যোগ দেওয়া। কিন্তু তাতে বহু সমস্যা। কংগ্রেস দল থেকে বহিস্কার করায় এই মুহূর্তে বহু কংগ্রেস সমর্থক তথা রাজস্থানবাসীর সহানুভুতি পাচ্ছেন তিনি। বিজেপিতে (BJP) যোগ দিলে সেটা আর থাকবে না। তাছাড়া, পাইলটের সঙ্গে যে ২২ জন বিধায়ক গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত ১০-১২ জন সরাসরি বিজেপিতে যোগ দিতে চান না। এদের মধ্যে কয়েকজন প্রবীণ বিধায়কও আছেন, যারা সারাজীবন বিজেপি বিরোধিতা করে এসে কেরিয়ারের শেষলগ্নে আর ‘ভুল’ করতে চান না। তাছাড়া, মাত্র ২২ জন বিধায়ক নিয়ে বিজেপিতে গেলে শচীন খুব বেশি সুবিধাও পাবেন না। কারণ, তাতেও কংগ্রেস সরকার পড়া মুশকিল।
দুই, নিজের আলাদা দল তৈরি করা। শচীনের জন্য এটাই এই মুহূর্তে সেরা বিকল্প। তিনি আলাদা দল তৈরি করলে অনুগামীদেরও আপত্তি নেই। মানুষের সহানুভুতিও তাঁর সঙ্গে থাকবে। শুধু তাই নয়, পাইলট আলাদা দল তৈরি করলে গেহলট শিবির থেকে অন্তত ৬ জন বিধায়ক তাঁর শিবিরে আসতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
কংগ্রেস কী বলছে?
পাইলটকে দল থেকে তাড়ানোর পর প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অশোক গেহলট বলছেন,”পাইলটকে এখন নিয়ন্ত্রণ করছে বিজেপি। ৬ মাস ধরে পরিকল্পনা চলছিল। কংগ্রেস (Congress) সব জানত। রাজস্থানের সরকার নিরাপদ।” গেহলট জানিয়ে দিয়েছেন, দলত্যাগ করলে বা হুইপ অমান্য করলে বিধায়কদের বিধায়ক পদ বাতিল করা হবে।
গেহলট সরকার সত্যি নিরাপদ তো?
পাইলট বিদায় নেওয়ার পর এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। কংগ্রেসের দাবি সরকার পুরোপুরি নিরাপদ। কিন্তু অঙ্কটা অতটাও সোজা নয়। পাইলটের বিদ্রোহের আগে কংগ্রেস শিবিরে স্পিকার এবং মুখ্যমন্ত্রী-সহ ১২৫ জন বিধায়ক ছিলেন। এদের মধ্যে কংগ্রেসের ১০৭ জন, ১৩ জন নির্দল, এবং পাঁচজন অন্যান্য দলের বিধায়ক। এর মধ্যে ২২ জন পাইলট শিবিরে ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন। আজ কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ১০২ জন। এদের মধ্যে ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টির দুই বিধায়ক আবার সমর্থন প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাহলে রইল বাকি ১০০। কংগ্রেসের ৯০ জন, নির্দল ৭ এবং অন্যদলের ৩ জন বিধায়ক এই মুহূর্তে গেহলট শিবিরকে সমর্থন করছেন। রাজস্থান বিধানসভার ম্যাজিক ফিগার ১০১। অর্থাৎ এই মুহূর্তে গেহলট সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়। তাছাড়া পাইলট ঘনিষ্ঠ অন্তত ৬ জন বিধায়ক এখনও গেহলট শিবিরে বসে আছেন। তাঁরাও যে কোনও সময় পালটি খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিপদ আরও বাড়বে। তবে এর মধ্যে আবার দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হবে। বিধায়করা দলত্যাগ করলে তাঁদের সদস্যপদ বাতিল হবে। সেক্ষেত্রে বিধানসভার কার্যকরী আসন সংখ্যা কমবে। এদিক থেকে দেখলে আবার কংগ্রেস এখনও শক্তিশালী জায়গায় থাকছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.