সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “আমরা সবাই বিজেপি কর্মী। আমরা সকলেই চাই বিজেপি জিতুক। মোদিজি আবার প্রধানমন্ত্রী হোন”, না কোনও বুথ কর্মী বা ব্লকস্তরের বিজেপি নেতা নন, এই কথাগুলি বলছেন রাজস্থানের রাজ্যপাল তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং। যার আমলেই সেই বিতর্কিত বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা ঘটেছিল। সাংবিধানিক পদে থেকেও একটি দলের হয়ে এভাবে সওয়াল করায় নির্বাচন কমিশনের রোষের মুখে রাজস্থানের রাজ্যপাল।
বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধীদের অস্ত্রগুলির মধ্যে অন্যতম হল, সাংবিধানিক স্বশাসিত সংস্থার কাজে হস্তক্ষেপ করার। বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি সরকারের আমলে নিযুক্ত রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়েও একাধিকবার প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে, গোয়া-মণিপুরে সরকার গড়ার সময় একক বৃহত্তম দল কংগ্রেসকে না ডেকে বিজেপিকে ডাকা। কর্ণাটকের ক্ষেত্রে আবার সংখ্যাগরিষ্ঠত জোটকে না ডেকে একক বৃহত্তম দল বিজেপিকে ডাকা এসব নিয়ে পক্ষপাতের অভিযোগ নতুন নয়। এরাজ্যেও একাধিকবার রাজ্যের কাজে সরাসরি হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। তাছাড়া দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লি এবং পুদুচেরির উপরাজ্যপালদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে।
পক্ষপাতের এমন হাজার অভিযোগ থাকলেও কোনও রাজ্যপাল এর আগে প্রকাশ্যে নিজেকে ‘বিজেপি কর্মী’ হিসেবে পরিচয় দেননি। যেটা করলেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজস্থানের বর্তমান রাজ্যপাল কল্যাণ সিং। রাজস্থানের রাজ্যপালের পদে আসীন থাকাকালীনই নিজেকে বিজেপির কার্যকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বিজেপি কর্মী হিসেবে দলের প্রার্থী নিয়ে গোষ্ঠী কোন্দলও মেটাতে গিয়েছিলেন তিনি। আলিগড়ে বিজেপি প্রার্থী সতীশ গৌতমকে নিয়ে দলীয় কোন্দল মেটানোর চেষ্টা করে গত সপ্তাহে বিজেপির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন রাজস্থানের রাজ্যপাল। তখন তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই বিজেপির কর্মকর্তা। কাজেই সবাই এটাই চাইব যে বিজেপি জয়ী হোক। সবাই চাইব যাতে ফের মোদিজি কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী হন।’
কল্যাণ সিংয়ের এই মন্তব্যে রাজ্যপালের মতো সাংবিধানিক পদের অবমাননা হয়েছে, তা মেনে নিয়েছে কমিশন। রাষ্ট্রপতির কাছে কমিশনের তরফে চিঠি লিখে কল্যাণ সিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যপালকে শাস্তি দেওয়া কমিশনের এক্তিয়ারের বাইরে, তাই এ বিষয়ে শাস্তির ব্যবস্থা রাষ্ট্রপতিকেই নিতে হবে। এখন দেখার রাষ্ট্রপতি রাজস্থানের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.