সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন জারি হয়েছিল ভারতে। এর ফলে সবথেকে অসুবিধার মধ্যে পড়েছিলেন ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিক। এর ফলে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ আর বিক্ষোভ হচ্ছিল। পায়ে হেঁটে নিজেদের বাড়িতে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যুও হয়ে অনেকের। এরপর চারিদিক থেকে চাপ তৈরি হওয়ার ফলে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো জন্য শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু করে কেন্দ্র। আর তার থেকেই তৈরি হয় নতুন এক সমস্যা। ভিন রাজ্য থেকে পরিযায়ীদের আসার ফলে বিভিন্ন রাজ্যে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পায়। সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলিতেও প্রচুর ভিড় জমে যায়। বাধ্য হয়ে অনেক রাজ্যই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে টালবাহানা শুরু করে বলে অভিযোগ। এর মধ্যেই জানা গেল পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ঢোকা ঠেকাতে বাঁধের জল ছেড়ে দিয়েছে রাজস্থানের একটি জেলা প্রশাসন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: কোথায় সামাজিক দূরত্ব! ভিড়ে ঠাসা হলঘরে ভাষণ দিলেন মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজস্থানের শ্রী গঙ্গানগর জেলায় গত ২০ মে পর্যন্ত মাত্র একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু, ভিন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা এই জেলায় আসার ফলে গত ২৪ দিনে আরও ১৯ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের ভিতরে থাকা ১৮ জন পরিযায়ী শ্রমিকের ১৬ জন দিল্লি থেকে ও দুজন মুম্বই থেকে এসেছিলেন। এই ঘটনার ফলে জেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। তারপরই পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্য আসা ঠেকাতে, তাঁরা যে গঙ্গা লিঙ্ক ক্যানাল দিয়ে হেঁটে রাজস্থানে ঢুকছিল তার বাঁধ খুলে দেয় জেলা প্রশাসন। আর এর ফলে ক্যানালটি জলে ভরতি হয়ে যায়। আটকে যায় শ্রমিকদের আসার পথ।
এপ্রসঙ্গে শ্রী গঙ্গানগর (Sri Ganganangar) জেলা কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও দিল্লি থেকে প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিক রাজস্থানের বিকানের, সিকার, ঝুনঝুনু ও যোধপুর জেলায় যাওয়ার জন্য ওই শুকনো খালটি ব্যবহার করছিলেন। এর ফলে জেলায় প্রচুর বাইরের মানুষের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছিল। লকডাউনের কোনও নিয়ম বজায় থাকছিল না। এদিকে করোনার সংক্রমণ বাড়ার জন্য এলাকাবাসীও প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল। তাই প্রথমে ওই খালের আট কিমি এলাকাজুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু, এত মানুষ আসছিলেন যে পরিস্থিতি সঙ্গীন হয়ে উঠছিল। পরিযায়ীদের শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করাও সম্ভব হচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.