সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা দেশে সাকুল্যে দু’টি রাজ্যে ক্ষমতায় আছে কংগ্রেস (Congress)। কিন্তু তাতেও শান্তি নেই। দু’মাস-ছ’মাস যেতে না যেতেই সেই দু’টি রাজ্যের একটির বিধায়কদের ধরে রাখার জন্য রীতিমতো কালঘাম ঝরাতে হয় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে। কথা হচ্ছে রাজস্থানের। নিজেদের হাতে ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও রাজস্থানে ঘোড়া কেনাবেচার আশঙ্কায় বিধায়কদের ফের হোটেলে সরাতে হচ্ছে কংগ্রেসকে।
আসলে আগামী ১০ জুন রাজস্থানের চার আসনে রাজ্যসভা নির্বাচন। ৪টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল কংগ্রেস। সেই মতো তিন আসনের জন্য রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, মুকুল ওয়াসনিক (Mukul Wasnik) এবং প্রমোদ তিওয়ারিকে প্রার্থীও করে হাত শিবির। বাকি একটি আসনে বিজেপির জয় নিশ্চিত। তাঁরা প্রার্থী করে ঘনশ্যাম তিওয়ারিকে। যার ফলে একটা সময় পর্যন্ত মনে হচ্ছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই চার প্রার্থী নির্বাচিত হবেন। কিন্তু এরপরই আসে টুইস্ট। নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেন মিডিয়া ব্যারন সুভাষ চন্দ্র (Subhash Chandra)। যিনি কিনা আগে বিজেপির টিকিটে রাজ্যসভায় গিয়েছেন। সূত্রের দাবি, এবারেও সুভাষ চন্দ্রকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গেরুয়া শিবির। আর তাতেই কালঘাম ছুটছে কংগ্রেস নেতৃত্বের।
কারণ, সুভাষ চন্দ্র প্রার্থী হয়ে যাওয়ায় নিজেদের তৃতীয় প্রার্থীকে জেতানোর ব্যাপারে আর নিশ্চিত হতে পারছে না হাত শিবির। ২০০ আসন বিশিষ্ট রাজস্থান বিধানসভায় একজন প্রার্থীকে জেতানোর জন্য প্রয়োজন ৪১টি ভোট। এই মুহূর্তে রাজস্থান বিধানসভায় কংগ্রেসের নিজেদের শক্তি ১০৮। অর্থাৎ নিজেদের দু’জন প্রার্থীকে জেতানোর পর কংগ্রেসের হাতে পড়ে থাকবে আর ২৬ জন বিধায়ক। আরও ১৫ জন বিধায়কের সমর্থন জোগাড় করতে হবে তাঁদের। অন্যদিকে রাজস্থান বিধানসভায় বিজেপির (BJP) বিধায়ক সংখ্যা ৭১। অর্থাৎ নিজেদের প্রার্থীকে জেতানোর পর বিজেপির হাতে থাকবেন আরও ৩০ জন বিধায়ক। সেক্ষেত্রে সুভাষ চন্দ্রকে জেতাতে বিজেপির প্রয়োজন হবে মাত্র ১১ জন বিধায়কের। সেদিক থেকে দেখতে গেলে বিজেপি কিছুটা হলেও চতুর্থ আসনটিতে জেতার ব্যাপারে এগিয়ে আছে। কিন্তু এখানেও টুইস্ট আছে। রাজস্থান বিধানসভায় মোট ১৩ জন নির্দল এবং ৮ জন অন্য দলের বিধায়ক আছেন। এই ১৩ জন নির্দলের মধ্যে ১২ জন আবার কংগ্রেস সরকারকে সমর্থন করেন। আর অন্য দলের বিধায়কদের মধ্যে সিপিএমের (CPIM) সদস্য দু’জন। তাঁরাও কংগ্রেসকে সমর্থন করবেন। একজন বিধায়ক আরএলডির এবং দু’জন বিধায়ক বিটিপির। এদেরও কংগ্রেসকে সমর্থন করার কথা। ৩ জন বিধায়ক আছেন আরএলপির। তাঁরাও কংগ্রেসকে সমর্থন করবেন বলেই আশাবাদী হাত শিবির।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের (Ashok Gehlot) আশঙ্কা বিজেপি এইসব নির্দল এবং ছোট দলের বিধায়কদের ভাঙানোর মরিয়া চেষ্টা করবে। কারণ এদের উপর কোনও হুইপ জারি হয় না। সেই আশঙ্কা থেকেই রাতারাতি বিধায়কদের উদয়পুরের একটি হোটেলে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাত শিবির। শুধু নির্দল এবং ছোট দলের বিধায়করা নন, কংগ্রেসের নিজস্ব বিধায়করাও আগামী ১০ জুন পর্যন্ত উদয়পুরের ওই হোটেলেই থাকবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.