সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দল নির্বাচনে লড়ছে না। তবু মহারাষ্ট্রের ভোটে ভীষণভাবে উপস্থিত এমএনএস প্রধান রাজ ঠাকরে। মারাঠাভূমে বিরোধী শিবিরের অন্যতম সেরা অস্ত্র হয়ে উঠছেন রাজ ঠাকরে। কীভাবে? নিন্দুকেরা বলছেন, হিন্দুত্ববাদী রাজ ঠাকরের সঙ্গে জোট করেছে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ কংগ্রেস-এনসিপি জোট। তাই, নির্বাচনে না লড়লেও বড় বড় জনসভা করে কংগ্রেসকে মদত করছেন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা সুপ্রিমো।
ভোট ঘোষণার আগে এনসিপির সঙ্গে জোট নিয়ে কথাবার্তা চলছিল এমএনএসের। রাজ ঠাকরের দল একটি আসনে লড়তে পারে বলে মনে করছিল রাজনৈতিক মহল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত হিন্দুত্ববাদী এমএনএসকে জোটে নিতে রাজি হয়নি কংগ্রেস। জোটে জায়গা না পেয়ে নিজেদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় এমএনএস। কিন্তু তাতে কী, রাজ ঠাকরের দলের যথেষ্ঠ সংগঠন আছে মহারাষ্ট্রের কিছু কিছু জায়গায়। বিশেষ করে মুম্বইয়ের একটি অংশে। এই সংগঠনকে কাজে লাগিয়ে তিনি বিরোধীদের সাহায্য করছেন বলে অভিযোগ।
তাছাড়া মহারাষ্ট্রে বিরোধী শিবিরের সেই অর্থে স্টার প্রচারক তেমন নেই। মারাঠা স্ট্রং ম্যান শরদ পাওয়ারের বয়স হয়েছে, তিনি অসুস্থও। কংগ্রেস অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত, এবং সেই অর্থে বিরাট শক্তিশালী কোনও মারাঠা মুখ নেই কংগ্রেস শিবিরেরও। সেই অভাব পূরণ করছেন রাজ ঠাকরে। তিনি মোদি বিরোধী প্রচারে রীতিমতো ঝড় তুলছেন। তাঁর জনসভাগুলিতে নামছে মানুষের ঢল। একেকটা জনসভায় মানুষ হচ্ছে লক্ষাধিক। আর সেই সব জনসভা থেকে মোদি এবং অমিত শাহদের রীতিমতো মুণ্ডপাত করছেন রাজ। নোট বাতিল-জিএসটি থেকে শুরু করে পুলওয়ামা-রাম মন্দির সব ইস্যুতেই মোদি-শাহ জুটির বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন রাজ ঠাকরে। আর তা রীতিমতো আগ্রাসী ভাষায়। তিনি জনসভাগুলি করছেন যে সব এলাকায় কংগ্রেস-এনসিপি দুর্বল সেসব এলাকাতেই।
ঠাকরের এই আগ্রাসী প্রচারে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে রাজ ঠাকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তারা। তাদের প্রশ্ন, রাজ ঠাকরের দল নির্বাচনে লড়ছে না তাহলে তিনি কেন প্রচার করছেন? আর প্রচারই যদি করছেন তাহলে কোন দলের হয়ে? কারণ, কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রচার করলে তাঁর প্রচারের যাবতীয় খরচ সেই দলকে দিতে হবে। দেখা যাচ্ছে রাজ প্রচার করছেন, অথচ তাঁর প্রচারের খরচ কোনও দলকে দিতে হচ্ছে না। বিজেপির দাবি, এতে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করা হচ্ছে।
মহারাষ্ট্র নির্বাচন কমিশন আবার পড়েছে ফাঁপরে। কারণ, রাজ ঠাকরে নিজের জনসভাগুলিতে মোদি সরকারকে আক্রমণ করলেও কাকে ভোট দিতে হবে, সে প্রসঙ্গ সুকৌশলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। যার ফলে, তাঁর আচরণের দায় কোন দলের উপর চাপানো হবে তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি মহারাষ্ট্রের সিইও দপ্তর। শেষ পর্যন্ত তাঁরা কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে বলেছে, এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.