সুব্রত বিশ্বাস: আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে বেসামাল ভারতীয় রেল। তাই এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে নিয়ন্ত্রণাধীন হাসপাতালগুলিকেই বন্ধের পরিকল্পনা নিতে চলেছে রেল বোর্ড। এজন্য জোন ও ডিভিশনের মতামত জানতে বোর্ড চিঠিও দিয়েছে।
রেল বোর্ডের ওয়েলফেয়ারের ডেপুটি ডিরেক্টর আশুতোষ গর্গ বলেন, “৪ আগস্ট জোন ও ডিভিসানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রেলের এনলিস্টেড বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন কর্মীরা। উত্তর পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড। বোর্ডের তরফে রেলমন্ত্রকের কাছেও সুপারিশ করা হয়েছে। আগেই বিবেক দেবরায় কমিটি রেল হাসপাতালগুলি তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছিল। হাসপাতাল তুলে দিয়ে কর্মীদের স্বাস্থ্য বিমা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে বাইরের হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসার সুবিধা পাবেন কর্মীরা। অন্যদিকে হাসপাতাল চালানোর খরচ বাঁচবে বলে আশা করা হয়েছে। “
এদিকে, এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি অমূলক বলে মনে করেছেন রেলের চিকিৎসক থেকে কর্মীরা। রেলে প্রায় তেরো লক্ষ কর্মী রয়েছে। ছোট বড় মিলিয়ে রয়েছে ১২৫টি হাসপাতাল। ফলে রোগীর যে চাপ তা বেসরকারি হাসপাতালগুলি নিতে পারবে না। পূর্ব রেলের বি আর সিং হাসপাতালে দৈনিক আউটডোরে রোগীর সংখ্যা কম বেশি ৭০০ জন। ইনডোরে ২০০ রোগী ভরতি থাকেন। লিলুয়া হাসপাতালে দৈনিক চারশোর বেশি রোগী হয় আউটডোরে। ইনডোরে ষাটজনের বেশি রোগী ভরতি থাকেন রোজই। কাঁচড়াপাড়া, অর্থোপেডিকে সংখ্যাটা আরও বেশি। ওয়ার্কশপগুলিতে প্রায়ই দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা হচ্ছে। এই ধরনের পরিষেবা বেসরকারি হাসপাতালে সম্ভব নয় বলে মনে করেছেন তাঁরা।
এই পরিকল্পনাকে অবাস্তব বলে জানিয়েছে কর্মী সংগঠনগুলি। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, “রেলে চিকিৎসা সুবিধা না থাকলে সেই রোগীদের অন্যত্র পাঠানোর ব্যবস্থা রয়েছে প্রথম থেকেই। রেল সিজিএস রেট নির্ধারণ করে দেবে। ফলে কোনও বড় হাসপাতাল ওই টাকায় চিকিৎসা করবে না। তখন কর্মীরা বেকায়দায় পড়বেন। রেল হাসপাতাল বন্ধ হতে দেওয়া যাবে না। এজন্য বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।” রেল চিকিৎসকদের মতে, চিকিৎসক নিয়োগ হচ্ছে না। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করতে যে প্রক্রিয়ায় চিকিৎসকদের কাজ করতে হয়, তা রেল হাসপাতালে হচ্ছে না, তবুও কর্মী ও চিকিৎসকের অভাবে কাজ থেমে থাকছে না। যা বেসরকারি হাসপাতালে হবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.