বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরেই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। তখন থেকেই বুঝিয়ে সুঝিয়ে তাঁকে সভাপতি পদে বহাল রাখার জন্য কংগ্রেসের অন্দরে সকলেই চেষ্টা করছেন। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুল নাকি পদত্যাগের বিষয়ে অনড়। তাই দল রাহুলের জায়গায় নতুন অন্তর্বর্তী সভাপতি নিয়োগের চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে। এবং উল্লেখযোগ্যভাবে এই সভাপতি হিসাবে গান্ধী পরিবারের বাইরের কাউকে আনা হতে পারে, এমন সম্ভাবনাই প্রবল। স্বয়ং রাহুলও পরিবারের বাইরে কাউকে এই পদের জন্য চাইছেন বলেই শোনা গিয়েছে।
[ আরও পড়ুন: ‘এই সাফল্য বিশেষ’, অসম লড়াইয়ে সুবিচার পেয়ে আপ্লুত কাঠুয়ার কাণ্ডের আইনজীবীর ]
দলের কোনও বর্ষীয়ান নেতাকে অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসাবে আনা হতে পারে এমন জল্পনাও রয়েছে। আবার একজন নয়, দু’জন অন্তর্বর্তী সভাপতি নিয়োগ করার কথাও ভাসছে। সেক্ষেত্রে একজন উত্তর ভারত ও একজনকে দক্ষিণ ভারত থেকে নিয়োগ করা হতে পারে। উত্তর ভারত থেকে রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ প্যাটেল এবং দক্ষিণ ভারত থেকে এবারের নির্বাচনে পরাজিত, গতবার কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের নাম আলোচনায় রয়েছে। তবে কংগ্রেস সভাপতি পদে থাকার জন্য রাহুলকে বোঝাতে দলের আরেক বর্ষীয়ান নেতা এ কে অ্যান্টনি চেষ্টা করছেন বলেই খবর।
আগামী সপ্তাহ থেকেই নতুন লোকসভার প্রথম অধিবেশন শুরু হচ্ছে। সেই সময়েই সংসদীয় দলের বৈঠকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে। শুধু কংগ্রেস সভাপতিই নয়, রাহুল যাতে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতার পদ গ্রহণ করেন, সেই ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন দলের নেতারা। কিন্তু রাহুল রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধীকেই লোকসভার দলনেত্রী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। লোকসভায় দলের দায়িত্ব সামলাতে ৭৩ বছর বয়সি সোনিয়ার এগিয়ে আসা তাৎপযর্পূর্ণ। রাহুল সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিতে চাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে কি তাঁর জায়গায় প্রিয়াঙ্কা আসতে চলেছেন?
[ আরও পড়ুন: লোকসভায় হারের পর এবার রাহুল গান্ধীকে ‘ঘরছাড়া’ করছে কেন্দ্র! ]
কিন্তু অন্তর্বর্তী সভাপতির ক্ষেত্রে রাহুল গান্ধী পরিবারের বাইরের কাউকে চাওয়ায় সেই আলোচনা থমকে গিয়েছে। গান্ধী পরিবারের বাইরের কাউকে পদ দেওয়ার বিষয়ে রাহুলের এই জোর দেওয়ার ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এবারের লোকসভা নির্বাচনের ফলেই বোঝা গিয়েছে মানুষ আর পরিবারতন্ত্রকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। খোদ রাহুলের আমেঠির মতো পারিবারিক আসনে হার তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। এমনকী, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, মিলিন্দ দেওরা, জিতিন প্রসাদের মতো উদাহরণও কংগ্রেসের ঘরে রয়েছে। এছাড়াও সারা দেশ জুড়েই এমন নজির রয়েছে। বিহারে লালুপ্রসাদ কন্যা মিসা ভারতী, কর্নাটকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার নাতি নিখিল কুমারস্বামীদেরও লোকসভা নির্বাচনে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। এই সব দিক বিবেচনা করেই নিজের পরিবারের বাইরের কাউকে দলের অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসাবে রাহুল দেখতে চাইছেন, এমনই ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.