সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একহাত নিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর কথায়, “দু’দিনেই মণিপুর শান্ত করতে পারে সেনা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী চাইছেন মণিপুর জ্বলুক। তাই পরিস্থিতি আজ এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে।”
গতকাল, বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবে লোকসভায় দেড়ঘণ্টা ধরে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মণিপুর (Manipur) নিয়ে তিনি তোপ দাগেন, “আসলে সেরাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার ইচ্ছাই ছিল না বিরোধীদের। সেই জন্যই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ভাষণের সময়ে তাঁরা হট্টগোল করেছেন।” মোদি সাফ জানান, মণিপুরের পাশে রয়েছে গোটা দেশ। প্রসঙ্গত, মোদির ভাষণের সময়ে একাধিকবার ‘মণিপুর, মণিপুর’ ধ্বনি শোনা যায় সংসদে। বিরোধী সাংসদরা ওয়াকআউট করতেই মণিপুর নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী।
মণিপুর নিয়ে আলোচনার সময় সংসদে না থাকলেও আজ দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনে মোদির বিরুদ্ধে অগ্নিবৃষ্টি করেন রাহুল। তিনি বলেন, “দু’দিনেই মণিপুর শান্ত করতে পারে সেনা। ভারতীয় সেনার উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী চাইছেন মণিপুর জ্বলুক। তাই পরিস্থিতি আজ এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। আমরা যখন মণিপুরে গিয়েছিলাম কুকিরা বলছে, ‘আপনারা আসুন, দেখুন তবে মেতেই রক্ষী সঙ্গে আনবেন না। আনলে গুলি করে দেব।’ একই কথা শুনেছি মেতেই শিবিরেও।”
উল্লেখ্য, মণিপুরে ট্রাইবাল বা আদিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই নতুন কিছু নয়। কয়েকশো বছর ধরে তা চলছে। তবে এবার তা ভিন্ন মাত্রা ধারণ করেছে। বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, মণিপুরে সংখ্যাগুরু মেতেইরা তফসিলি উপজাতির তকমা দাবি করে বারুদের স্তূপে আগুন দিয়েছে।গত এপ্রিল মাসে রাজ্য সরকারকে মেতেইদের দাবি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এর ফলে, কুকি-ঝাোমি ও টাংখুল নাগাদের মতো রাজ্যের সংখ্যালঘু আদিবাসীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছে। কারণ, সংখ্যাগুরুর বিরুদ্ধে ‘শিডিউল ট্রাইব স্ট্যাটাস’ই তাদের রক্ষাকবচ। সেটা না থাকলে পাহাড় ও উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত অন্যান্য এলাকায় অবাঞ্ছিত প্রবেশ ঘটবে মেতেইদের। সংখ্যাগুরুর ভৌগলিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে অস্তিত্ব লোপ পাবে সংখ্যালঘুর। সেই ভয় অযৌক্তিকও নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.