সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘হিন্দু’ মন্তব্যে এবার কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নামলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। কড়া সুরে জানালেন, ‘হিন্দুদের হিংসাত্মক বলে আক্রমণ করে হিন্দু সমাজকে লজ্জিত করেছেন রাহুল। এমন মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে নাকখত দিয়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত রাহুল গান্ধীর।’
লোকসভায় বিরোধী দলনেতা হিসাবে প্রথম ভাষণে কেন্দ্রের শাসকদলকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাহুলের মুখে শোনা যায় ‘হিন্দুত্ববাদ’ প্রসঙ্গ। বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, “যারা নিজেদের হিন্দু বলে দাবি করছে, ২৪ ঘণ্টা তাঁদের মুখে শোনা যাচ্ছে, হিংসা, ঘৃণা ও অসত্য কথা।” একইসঙ্গে তিনি যোগ করেন, “হিন্দুরা কখনই হিংসা ছড়ায় না। ধর্মের নামে গোটা দেশে হিংসা এবং ঘৃণা ছড়িয়ে চলেছে বিজেপি (BJP)।” তাঁর মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। রাহুলের (Rahul Gandhi) ভাষণের মাঝেই স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উঠে দাঁড়িয়ে বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, “গোটা হিন্দু সমাজকে উদ্দেশ করে যে মন্তব্য করা হচ্ছে তা অত্যন্ত গুরুতর।” বিজেপি সমর্থকদের অভিযোগ ছিল, হিন্দুবিদ্বেষী মন্তব্য ছড়াচ্ছেন কংগ্রেস সাংসদ।
এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমে পড়ে বিজেপি। এ প্রসঙ্গেই রাহুলকে আক্রমণ শানিয়ে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি রাহুলের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছি। বিশ্বের গণতন্ত্রের মন্দির বলে পরিচিত সংসদে দাঁড়িয়ে রাহুল গান্ধী তাঁর বয়ানে গোটা হিন্দু সমাজকে লজ্জিত করেছেন। হিন্দুদের হিংসাত্মক বলে মন্তব্য করা আসলে ওনার কুৎসিত মানসিকতার পরিচয়।” একইসঙ্গে তাঁর দাবি, “ভারত বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে সবচেয়ে অধিক সংখ্যায় বাস করেন হিন্দুরা। সেই দেশের লোকসভায় বিরোধী দলনেতা যদি এভাবে হিন্দু সমাজের উদ্দেশে এমন মন্তব্য করেন তাহলে দেশ এমন নেতাকে কীভাবে সহ্য করবে। তাঁর এই ধরনের মন্তব্যের জেরে গোটা দেশ তাঁর উপর ক্ষুব্ধ। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি যে মন্তব্য করেছেন তাঁর জন্য ওনার উচিত নাকখত দিয়ে ক্ষমা চাওয়া।”
তবে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য নিয়ে বিজেপি নেতারা রাহুলের বিরুদ্ধে সরব হলেও তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন উত্তরাখণ্ডের শঙ্করাচার্য অবিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। শঙ্করাচার্যের অভিযোগ, “রাহুলের বক্তব্যের নামে অর্ধসত্য প্রচার করা হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “লোকসভায় রাহুল যে বক্তৃতা দিয়েছেন তাতে হিন্দুধর্মের প্রতি কোনও অশ্রদ্ধা নেই। বরং রাহুল যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ সঠিক।” তিনি আরও বলেন, “ধর্মের অর্থ আসলে ধারণ করা। সেখানে ঘৃণার জায়গা নেই। স্রেফ হিন্দু নয়, যে কোনও ধর্মের ক্ষেত্রেই এ কথা সত্যি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.