ফাইল ছবি।
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: দেশে ভয়ংকরভাবে বেড়ে চলেছে যুব সম্প্রদায়ের আত্মহত্যার ঘটনা। গত এক দশকে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার সংখ্যা ৬,৬৫৪ থেকে লাফিয়ে বেড়েছে ১৩,০৪৪ জনে। সদ্য প্রকাশিত ভয়াবহ এই রিপোর্ট তুলে ধরে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে একহাত নিলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী।
সোশাল মিডিয়ায় চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান তুলে ধরে এদিন রাহুল গান্ধী লেখেন, ‘বিশ্বের মধ্যে ভারত আজ সর্ব বৃহৎ যুব জনসংখ্যার দেশ। অথচ দুঃখের কথা এটাই যে এই যুবশক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার বদলে তাকে চরম অসুবিধা ও বাধা বিপত্তির মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। গত দশকে যেখানে ০ থেকে ২৪ বছর বয়সিদের জনসংখ্যা ৫৮.২০ থেকে ৫৮.১০ কোটি হয়েছে। পাশাপাশি পড়ুয়াদের আত্মহত্যার সংখ্যা ৬,৬৫৪ থেকে লাফিয়ে ১৩,০৪৪ জনে পৌঁছে গিয়েছে। এই ঘটনা দেশের যুব সম্প্রদায়ের সামাজিক, আর্থিক ও মানসিক গুরুতর সমস্যার দিকেই ইঙ্গিত করছে।’
এই ঘটনার জন্য কেন্দ্রের ভুল নীতিকে দায়ী করে সোশাল মিডিয়া রাহুল গান্ধী লেখেন, ‘বর্তমানে দেশের যুব সম্প্রদায় ভয়াবহ বেকারত্ব, প্রশ্ন ফাঁস, শিক্ষা দুর্নীতি, ব্যয়বহুল শিক্ষা, সামাজিক নিপীড়ন, আর্থিক বৈষম্য, অভিভাবকদের চাপের মতো নানা সমস্যার মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সরকারের কাছে আমার আবেদন ছাত্র-যুবকদের এই কঠিন পথ সহজ করতে যেন সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তাঁদের চলার পথে বাধা না দিয়ে যেন সহায়তার হাত বাড়ানো হয়। অভিভাবকদেরও উচিত তাঁদের সন্তান্দের পাশে দাঁড়ানো এবং উৎসাহ দেওয়া।’ একইসঙ্গে যুবাদের কাছে তাঁর আবেদন, ‘ভয় না পেয়ে সমস্যার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন, প্রশ্ন করুন, অধিকার দাবি করুন। আমি আপনাদের পাশে আছি এবং আপনাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথ থেকে সংসদ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার বার্ষিক আইসি৩ কনফারেন্স ও এক্সপো ২০২৪-এক রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, “প্রতি বছর সার্বিক আত্মহত্যার ঘটনা ২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু পড়ুয়াদের আত্মঘাতী হওয়ার হার গত দু’দশকে ৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা রীতিমতো উদ্বেগজনক। ২০২২ সালে যতজন আত্মহত্যা করেছে, তার মধ্যে ৫৩ শতাংশ ছাত্র। ২০২১ আর ২০২২ মধ্যে ছাত্রদের আত্মহত্যার ঘটনা ৬ শতাংশ কমলেও, ছাত্রীদের আত্মহত্যা বেড়েছে ৭ শতাংশ। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে ছাত্রী আত্মঘাতীর হার ৬১ শতাংশ, ছাত্রদের হার ৫০ শতাংশ। দেশে আত্মহত্যার এমন ভয়াবহ রিপোর্ট যে রীতিমতো উদ্বেগজনক তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.