সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত পাঁচ মাসে মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে একের পর এক চিতার মৃত্যু হয়েছে। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। চিতামৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিশেষজ্ঞদের একাংশ দাবি করেন, আফ্রিকা থেকে আসা চিতাগুলির মৃত্যুর কারণ হতে পারে তাদের গলায় থাকা রেডিও কলার। যা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। তারপরই বনদপ্তরের পক্ষ থেকে দশটি চিতার রেডিও কলার খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই পরিকল্পনা মতো ছ’টি চিতার স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য রেডিও কলার খোলা হল।
সোমবার বনদপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, “কুনো জাতীয় উদ্যানের ছ’টি চিতার স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য গলা থেকে রেডিও কলার খোলা হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়াটি কুনোর পশুচিকিৎসক ও নামিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে করা হয়েছে। গৌরব, শৌর্য, পাভন, পাভক, আশা ও ধীরা নামে ওই ছয় চিতা সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে।”
প্রসঙ্গত, কুনো জাতীয় উদ্যানে গত ১১ জুলাই মৃত্যু হয় তেজস নামের একটি চিতার। তার তিনদিনের মাথায় ১৪ জুলাই সুরজ নামের আরেকটি চিতারও মৃত্যু হয়। সব মিলিয়ে গত পাঁচ মাসে আটটি চিতার মৃত্যু হয়েছে ভারতে। এরপরই চিতামৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দু’জন বিশেষজ্ঞ ভারতে আসেন ।
ভারতে চিতা আনার ঐতিহাসিক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বিশেষজ্ঞ অ্যাড্রিয়ান টর্ডিফ বলেছিলেন, “রেডিও কলার চিতা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তবে এটাই যে একমাত্র কারণ তা নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার শুষ্ক আবহাওয়ায় অভ্যস্ত ওই চিতাগুলি। এই প্রথম ভারতীয় বর্ষা দেখছে তারা। ফলে নানান সমস্যা তৈরি হতে পারে।” তারপরই ‘রেডিও কলার’ নিয়ে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে বৈঠক করা হয়। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দশটি চিতার গলা থেকে রেডিও কলার খুলে পরীক্ষানিরীক্ষা করা হবে। চিতার গলায় ‘রেডিও কলার’ ব্যবহার করা হয় তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখার জন্য।
উল্লেখ্য, কুনো জাতীয় উদ্যানে একের পর এক চিতামৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিমকোর্ট। বিচারপতি বি আর গাভাই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, “গত সপ্তাহে দু’টি মৃত্যু হয়েছে। কেন বিষয়টা প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে উঠছে? দয়া করে কিছু সদর্থক পদক্ষেপ করুন। কেন এদের সকলকে একজায়গায় রাখা হল বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে না রেখে?” এই বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছিল, সরকার তাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে এই সমস্যার সমাধানে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.