সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাদি শর্মা। ব্রাসেলসের বাসিন্দা এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলাই এখন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু গোটা দেশে। জানা গিয়েছে, কাশ্মীরে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাংসদদের আমন্ত্রণ জানানোর নেপথ্যে রয়েছেন এই ‘বিজনেস ব্রোকার’। যেখানে বিরোধীদের কাশ্মীরে পা রাখার অনুমতি নেই সেখানে এই মহিলা কীভাবে বিদেশি প্রতিনিধিদের উপত্যকায় সফরের জন্য সরকারি ছাড়পত্র পেয়ে গেলেন। এবার প্রশ্ন উঠছে কে এই মহিলা? এবং কেনই বা তিনি ইউরোপের সাংসদদের কাশ্মীরে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন? এর পিছনে কার মদত রয়েছে?
জানা গিয়েছে, ২৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সাংসদ হলেও তাঁদের এই কাশ্মীর আগমন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সরকারি সফর নয়। এমনকী ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফেও ডাকা হয়নি। বরং উইমেনস ইকোনমিক এন্ড সোশ্যাল থিংক ট্যাঙ্ক নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান মাদি শর্মার আমন্ত্রণেই ওই প্রতিনিধিদল কাশ্মীর সফরে আসে। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। ওই সংস্থার ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, মাদি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মাদি শর্মা আন্তর্জাতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান তথা এনজিওগুলিকে কাজকর্মে অনুপ্রেরণা দেন। তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে বর্ণনা দেওয়া, তিনি একজন আন্তর্জাতিক বিজনেস ব্রোকার, শিক্ষা উদ্যোগপতি ও বক্তা। তিনিই নাকি ইউরোপের ৩০ জন সাংসদকে ইমেল মারফত কাশ্মীর সফরে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান এবং প্রতিশ্রুতি দেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ এবং জম্মু-কাশ্মীর পরিদর্শন করানো হবে।’ এছাড়াও ইমেলে প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করে এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরাট জয় এবং দেশের উন্নয়ন ও বৃদ্ধির জন্য তাঁর অবদানের কথা ফলাও করে বলা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ সাংসদ তথা ব্রিটেনের লিবারাল ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রতিনিধি ক্রিস ডেভিস সেই আমন্ত্রণের ইমেলের স্ক্রিনশট প্রকাশ্যে এনেছেন। একইসঙ্গে তিনি আমন্ত্রণকে নাকচ করে একে ‘পিআর স্টান্ট (লোকদেখানো)’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে তাহলে এই প্রতিনিধিদলের কাশ্মীর সফরের খরচ বহন করল কে? কারণ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বা বিদেশমন্ত্রক, কেউই এর সঙ্গে সরকারিভাবে যুক্ত নয়। জানা গিয়েছে, আমন্ত্রণপত্রে মাদি শর্মা উল্লেখ করেছেন, দিল্লি স্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর নন-অ্যালাইনড স্টাডিজ এই সফরের যাবতীয় খরচ বহন করবে। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা হলেন ড. গোবিন্দ নারায়ণ শ্রীবাস্তব। কিন্তু ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পেশায় শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিক শ্রীবাস্তব ১৯৯৯ সালেই মারা গিয়েছেন। তাহলে এই প্রতিষ্ঠানের এখন মাথায় কে তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। তাহলে কেন এই মাদি শর্মা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাংসদদের কাশ্মীরে আসানর জন্য আমন্ত্রণ জানালেন এবং এর উদ্দেশ্য কী তা নিয়ে উঠছে বিস্তর প্রশ্ন।
উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে সাংসদরা এসেছিলেন তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা কাশ্মীরে শান্তি চান। সন্ত্রাসবাদ গোটা বিশ্বের সমস্যা। গোটা ইউরোপ সন্ত্রাস দমনে ভারতের পাশে আছে। ওই প্রতিনিধিদল ইউরোপীয় ইউনিয়নকে কোনও রিপোর্ট দেবে না বলেও জানিয়েছে। তাঁরা বলছেন, “কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরের বিষয়। তাই আমরা কোনও রিপোর্ট দেব না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.