Advertisement
Advertisement

Breaking News

Pahalgam terror attack

গোয়েন্দাদের আভাসেও ঠেকানো গেল না সন্ত্রাস! পহেলগাঁও হামলার পর প্রশ্ন, জঙ্গি এল কীভাবে?

পহেলগাঁও থেকে বৈসরন উপত্যকা যাওয়ার পথ বেশ দুর্গম। সেখানে গাড়ি চলাচলের কোনও পথ নেই।

Question arises on intelligence failure in Pahalgam terror attack
Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:April 24, 2025 5:54 pm
  • Updated:April 24, 2025 5:54 pm  

সোমনাথ রায়, পহেলগাঁও: “কী বলব দাদা, লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।” অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই, আমাদের কাছে এই বিষয়ে কোনও খবর ছিল না। আমাদের ব্যর্থতায় এতগুলো পরিবার শেষ হয়ে গেল।” লালচকের বিখ্যাত ঘণ্টা ঘর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে শ্রীনগর পুলিশ কন্ট্রোল রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে কথাগুলি বলছিলেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক। একই সুর কানে এসেছে কাশ্মীর শেখ উল আলম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের উচ্চপদস্থ বাঙালি আধিকারিকের কথাতেও।

মোবাইলে বাড়ির লোকের সঙ্গে বাংলায় কথা বলছিলেন। পর্যটক কিনা জানতে চাইতেই দিলেন নিজের পরিচয়। তিন বছর শ্রীনগরে পোস্টিং। ১৯ এপ্রিল সপরিবার ছিলেন বৈসরন উপত্যকায়। সোমবার গিয়েছিলেন দিল্লি। কথা ছিল আগ্রা-সহ এদিক ওদিক ঘুরবেন। মঙ্গলবারের ঘটনার পর পরিবারকে ছেড়ে ছুটে আসতে হয় শ্রীনগরে। তিনিও বলছিলেন, ব্যর্থতার কথা। আর সেই পুলিশকর্তা। “আমাদের কাছে যদি কোনও আগাম খবর থাকত তবে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম। কিন্তু এমনটা যে হতে পারে এমন কোনও খবর পুলিশ প্রশাসনের কাছে ছিল না”, আক্ষেপ করে বলছিলেন তিনি। সীমান্ত থেকে পহেলগাঁওয়ের দূরত্ব অনেকখানি। তা সত্ত্বেও কীভাবে ওপার থেকে এত দূর চলে এল আততায়ীরা?

Advertisement

পহেলগাঁও থেকে বৈসরন উপত্যকা যাওয়ার পথ বেশ দুর্গম। সেখানে গাড়ি চলাচলের কোনও পথ নেই। হয় পায়ে হেঁটে অথবা ঘোড়ায় বা খচ্চরে চেপে যেতে হয় সেখানে। এতটা পথ পার হয়ে তারা পৌঁছে গেল সেখানে। তারা রেইকি করল, সেনার পোশাক গায়ে সঙ্গে অস্ত্র নিয়ে ঘাপটিও মেরে থাকল। অথচ গোয়েন্দা বিভাগ কিছুই টের পেল না? উঠছে এই ধরনের নানা প্রশ্ন। একটি সূত্রের খবর অনুযায়ী, দিনকয়েক আগে পাক অধ্যুষিত কাশ্মীরের এক সন্ত্রাসবাদী এই ধরনের গণসংহারের ইঙ্গিত দিয়েছিল। হয় তা বুঝতেই পারেনি গোয়েন্দাবিভাগ, অথবা তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

জানা যাচ্ছে, পিওকে ও পাকিস্তানের হ্যান্ডলারদের সহায়তায় নাশকতার এই ছক অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করা হয়েছিল। ওপার থেকে অস্ত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের এদেশে পাঠানোর পাশাপাশি খোঁজা হয়েছিল এমন পর্যটনস্থল, যেখানে পর্যটকের সংখ্যা প্রচুর হলেও নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে তুলনামূলক কম। শুধু তাই নয়, আততায়ীদের কাছে ওপার থেকে রিয়াল টাইম নানা নির্দেশও পাঠানো হচ্ছিল বলেও শোনা যাচ্ছে। যে চার আততায়ী মঙ্গলবার নাশকতা চালিয়েছিল, তাদের হেলমেটে ক্যামেরা লাগানো ছিল। যার ফলে ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং ও রিয়াল টাইম আপডেটও নিচ্ছিল তাদের ‘আকা’-রা। এরা পুঞ্চেও এই ধরনের সন্ত্রাস করেছে বলে তথ্য সামনে আসছে। যে দুই আধিকারিক নিজেদের ব্যর্থতার কথা বলছিলেন, তাঁদের বক্তব্য অনুযায়ী, বৈসরনের ওই এলাকার কাছাকাছি তেমন কোনও বসতি নেই। মোবাইল নেটওয়ার্কেরও সমস্যা রয়েছে। যার ফলে ঘটনার খবর আসতেও কিছুটা অতিরিক্ত সময় লেগে যায়। কাশ্মীরের অন্যান্য প্রান্তের থেকে বৈসরনে নিরাপত্তায় যে কিছুটা ফাঁক রয়েছে, তা কার্যত স্বীকারও করে নিয়েছেন সেই পুলিশ আধিকারিক। কিন্তু পুলওয়ামার মতোই কেন ফের এত বড় ব্যর্থতা গোয়েন্দাবিভাগের? এতগুলি প্রাণ অসময়ে শেষ হয়ে যাওয়ার দায় কার? উঠছে এই ধরনের নানা প্রশ্ন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement