সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বে মার্কিন আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে চিন। উদ্বেগ উসকে ইন্দো-প্যাসিফিক বা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমে আগ্রাসী হয়ে উঠছে ‘ড্রাগন’। কৃত্রিম দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে তারা। ফলে বিপন্ন ‘ওপেন ট্রেড রুট’ বা মুক্ত বাণিজ্যপথ। লাল ফৌজের তৎপরতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এহেন পরিস্থিতিতে নাম না করে বেজিংকে কড়া বার্তা দিল কোয়াড গোষ্ঠী।
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ভারত মিলে তৈরি হয়েছে ‘কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ’ বা কোয়াড (QUAD) জোট। বিশ্লেষকদের মতে, মূলত চিনকে নজরে রেখেই একজোট হয়েছে চারটি দেশ। শুক্রবার দিল্লিতে জি-২০ বৈঠকের ফাঁকে আলোচনায় বসেন কোয়াডের বিদেশমন্ত্রীরা। ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের তত্ত্বাবধানে ওই বৈঠকে অংশ নেন জাপানের বিদেশমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি, অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী পেনি ওং এবং মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এক যৌথ বিবৃতিতে কোয়াড সাফ জানিয়েছে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্বাধীনতা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর কোয়াড।
বলে রাখা ভাল, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের একাধিক দেশ যেমন–ভিয়েতনাম, মায়ানমার, ব্রুনেই কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড Association of Southeast Asian Nations বা ASEAN গোষ্ঠীভুক্ত। সদস্য না হলেও এই গোষ্ঠীর পর্যবেক্ষক পদে রয়েছে ভারত। এই গোষ্ঠীটির সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্কও ভাল। সূত্রের খবর, ভারতের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিকল্পনা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ রয়েছে রাশিয়ার মনে। আমেরিকার ‘প্ররোচনায়’ কোয়াড আসলে চিন ও রাশিয়াকে একঘরে করে ফেলতে তৈরি বলে মনে করছে মস্কো। এনিয়ে কূটনীতির পর্দার আড়ালে বিস্তর টানাপোড়েন চলছে। গতকাল দিল্লিতে একথা বলেওছেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ভারতের সামরিক প্রস্তুতির সিংহভাগ এখন তাই চিনকেন্দ্রিক। তালিবান প্রত্যাবর্তনের পর কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ভারত অবশ্যই চিন্তিত। কিন্তু তার চেয়েও বেশি চিন্তা ‘এলএসি’ বরাবর চিনা উপস্থিতি। রাফালের ঘাঁটি তাই হরিয়ানার আম্বালা ও পশ্চিমবঙ্গের কলাইকুন্ডা, হাসিমারা। অরুণাচল প্রদেশ সীমান্তে মোতায়েন হয়েছে আমেরিকার চৈনিক যুদ্ধ-হেলিকপ্টার, অত্যাধুনিক হাউইৎজার, এল-৭০ এয়ার ডিফেন্স ব্যবস্থা ও সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল। পাহাড়ি যুদ্ধে পারদর্শী নতুন ‘মাউন্টেন স্ট্রাইক ফোর্স’ (৯০ হাজার জওয়ান)-এর সদর হয়েছে পানাগড়। ‘এলএসি’ বরাবর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় গড়া হচ্ছে রাস্তা, সেতু, হাসপাতাল, এয়ার স্ট্রিপ-সহ সামরিক পরিকাঠামো। চিনা তৎপরতার জবাবে ‘অগ্নি ৫’-এর সফল উৎক্ষেপণ জানান দিয়েছে, গোটা চিন এখন পরমাণু-শক্তিধর ‘অগ্নি ৫’-এর আওতায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.