সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেবায়েত-পুলিশ সংঘর্ষে রাতভর ভোগ পেলেন না মহাপ্রভু জগন্নাথদেব। সেই সঙ্গে দেব দর্শনে বঞ্চিত হলেন হাজার হাজার পুণ্যার্থী। ঘটনাস্থল, শ্রীধাম।
সমস্যার শুরু বৃহস্পতিবার বিকেলে। দুই শ্বেতাঙ্গ পুণ্যার্থীকে নিয়ে মন্দির পরিদর্শন করাচ্ছিলেন মন্দিরের অন্যতম প্রধান সেবায়েত ভবানী মহাপাত্র। পুলিশ তাঁদের পথ আটকায়। পুলিশের দাবি, ওই শ্বেতাঙ্গ পুণ্যার্থী বিদেশিনী। ফলে তাঁর মন্দিরে প্রবেশাধিকার নেই। যদিও পুলিশের সেই দাবি মানতে চাননি সেবায়েত ভবানী। তিনি পালটা দাবি করে বলেন, ওই পুণ্যার্থী বিদেশি নন। তিনি ওই পুণ্যার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। তাঁর ত্বক ফর্সা। চোখের মণি ও চুল কটা। ফলে বিদেশি বলে ভুল হচ্ছে। কিন্তু তাঁর দাবি মানতে চায়নি পুলিশ। দুই পুণ্যার্থীর পরিচয়পত্র দেখতে চায়। না দেখালে দুই দর্শনার্থীর সঙ্গে সেবায়েত ভবানী মহাপাত্রকে পুলিশ আটক করে। এরপরেই বিক্ষোভে নামে পুরী মন্দিরের সেবায়েত সংগঠন।
শুক্রবার তাঁরা মূল মন্দিরের সব দরজা বন্ধ করে দেন। ফলে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লক্ষাধিক দর্শনার্থী জগন্নাথ দর্শনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। রীতি ভেঙে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকল জগন্নাথদেবের পুজো অর্চনা। এমনকী ভোগ নিবেদনও। বৃহস্পতিবার রাত থেকে দফায় দফায় পুরী মন্দির পরিচালন সমিতি ও মন্দিরের সেবায়েত সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুরী কালেক্টর জ্যোতিপ্রকাশ দাস। কিন্তু শুক্রবার বেলা পর্যন্ত কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। সেবায়েত সংগঠনের দাবি, পুলিশের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করতে হবে। জগন্নাথ মন্দিরের এক সেবায়েত সম্বিত মুদুলি জানান, তাঁদের দাবি মানা না হলে কোনও ধর্মীয় আচার পালন করা হবে না। অন্য এক সেবায়েতের দাবি, শুক্রবার ভক্তদের জন্য মন্দিরের দরজা খোলার সম্ভাবনা নেই। তবে, রাতে মহাপ্রভু ও বলরাম, সুভদ্রার জন্য ভোগ রান্না হবে। যদিও গোটা দিন জগন্নাথ দর্শন থেকে বঞ্চিত হয়ে ক্ষোভে ফুটছেন কয়েক লক্ষ ভক্ত। মাস কয়েক আগেও দু’দিনের জন্য বন্ধ ছিল পুরী মন্দিরের দরজা। আদালতের নির্দেশে পান্ডারাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুলিশের সঙ্গে পান্ডাদের ঠান্ডা লড়াই-ই ঘনঘন মন্দিরে অশান্তির কারণ বলে মনে করেছেন অনেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.