সোম রায়, পুলওয়ামা: কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার আতঙ্ক এখনও কাটেনি। কিন্তু ভারতের এয়ারস্ট্রাইক জবাবের পর খানিকটা হলেও স্বস্তির শ্বাস ফেলেছে পুলওয়ামা। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই অনুকূল। তাই যেই রাস্তায় সেনা কনভয়ে হামলা চালিয়েছিল জইশ জঙ্গিরা, সেই রাস্তা ফের রবিবার থেকে চালু হল। কিন্তু জঙ্গিরা যে পুরোপুরি নজর সরিয়ে নেয়নি, তার প্রমাণও মিলল এদিন। এর পাশাপাশি আরও একটি জম্মু ও কাশ্মীরের ডিএসপির (অপারেশন) অবন্তিপোরা পুলওয়ামার বাড়িতে গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। তবে ঘটনায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামার জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়ের উপর সিআরপিএফের ৭৮টি গাড়ির কনভয়কে টার্গেট করে জইশ জঙ্গিরা। কনভয়ে ছিলেন কমপক্ষ ২৫০০ জন জওয়ান৷ আচমকাই ২০০ কেজি বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়ি ওই কনভয়ে ঢুকে পড়ে৷ ধাক্কা মারে জওয়ানদের বাসে৷ সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে জঙ্গিরা গুলি চালায় বলে দাবি জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের। আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল আহমেদের ভিডিও প্রকাশ করে ঘটনার দায় স্বীকার করে জইশ-ই-মহম্মদ৷ প্রায় ৭০ জনেরও বেশি জইশ জঙ্গি সেনা কনভয়ে হামলা চালিয়েছিল। তারপর থেকে একপ্রকার স্তব্ধ হয়ে যায় পুলওয়ামা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, পুলওয়ামায় ওই ভয়ঙ্কর হামলার পর থেকে সন্ধে ৬টার পর আর গাড়ি চলে না। আগে দোকান রাত দশটা পর্যন্ত খোলা থাকত। এখন ৭ টা-সাড়ে ৭ টা বেজে গেলেই লোকে বাড়ি চলে যায়।
[ ভোটপ্রচারে ব্যস্ত নেতা-মন্ত্রীরা, শহিদের শেষকৃত্যে এলেন না সময়ের অভাবে ]
ভারত জইশদের জঙ্গিঘাঁটিগুলিতে হামলা চালানোর পরও ১৪ ফেব্রুয়ারির দুঃস্বপ্ব থেকে ফিরতে পারেনি কাশ্মীর। জঙ্গিহানা ও তার পালটা ভারতের এয়ারস্ট্রাইক মিলিয়ে ক্রমশ যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছিল দুই দেশের। কাশ্মীরের বাসিন্দাদের প্রশাসনের তরফে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুত করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। ওষুধ, খাদ্যসামগ্রী মজুত করার পালা শুরু হয়েছে। পাকিস্তান আক্রমণ চালায় ভারতে, তাদের হানাদারি বিমান এফ-১৬ ধাওয়া করতে গিয়ে পাকিস্তানি সেনার হাতে গ্রেপ্তার হন ভারতের উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। কিন্তু তাঁকে পাকিস্তান ফিরিয়ে দেওয়ার পর আপাতত উত্তেজনা অনেকটাই প্রশমিত হযেছে। তাই ফের নিত্যদিনের চেনা রূপে ফিরতে চলেছে পুলওয়ামা। ঘটনাস্থল ক্রমশ স্বাভাবিক হতে চলেছে।
অন্যদিকে, ভারত-পাক উত্তেজনা জট কাটার পর ফের চালু হতে চলেছে সমঝোতা এক্সপ্রেস। রবিবার থেকে ফের নির্দিষ্ট পথেই চলছে এই ট্রেন। পাকিস্তান বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ছাড়ার একদিনের মধ্যেই সরকারি সূত্রে এই খবর জানানো হয়। দিল্লি থেকে পাকিস্তানের দিকে রওনা দেয় সমঝোতা। দিল্লি থেকে আট্টারি সীমান্ত হয়ে পাকিস্তান যায় ট্রেনটি। সোমবার পৌঁছবে লাহোর। আট্টারিতে ট্রেন থামিয়ে আগের মতো পরীক্ষা করা হবে যাত্রীদের পাসপোর্ট ও ভিসা। লাহোর থেকে ট্রেনটি ছাড়বে সোমবার।
[ সোশ্যাল মিডিয়ায় যুদ্ধ না করে সীমান্তে যান, কটাক্ষ মৃত স্কোয়াড্রন লিডারের স্ত্রীর ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.