সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথমবার সাংসদ হয়ে দিল্লি সফরের আনন্দ মুহূর্তে বদলে গিয়েছিল বিষাদে। কঙ্গনা রানাউতকে সপাটে চড় কষিয়ে দেশজুড়ে প্রচারের আলোয় উঠে এসেছেন কৃষক পরিবারের মেয়ে পেশায় জওয়ান কুলবিন্দর কৌর। চড় কাণ্ডে তাঁর দাবি, আন্দোলনরত কৃষকদের অপমানজনক মন্তব্যের বদলা এই চড়। এহেন কুলবিন্দর কৌরকে এবার সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন কৃষকরা। তাঁদের দাবি, ওই সাহসিনী কন্যা পুলিশি হেফাজত থেকে বাইরে এলেই তাঁকে সম্মানিত করা হবে।
কৃষিনির্ভর রাজ্য হরিয়ানার মাটিতে এখনও চলছে সরকারের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন (Farmers Protest)। সেই ধরনা আন্দোলন থেকে শুক্রবার সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে থাকা কুলবিন্দর কৌর বাইরে বের হলে তাঁকে সংবর্ধনা দেবেন তারা। এপ্রসঙ্গে কৃষক নেতা আজাদ পালনবা বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে দেশ তো বটেই বিশ্বেও শুরু হয়েছে চর্চা। কঙ্গনা এখনও বলে চলেছে উগ্রপন্থা, সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহ দিতে এই কাজ করা হয়েছে। এখনও মুখে লাগাম নেই ওনার।” পাশাপাশি বলেন, ”ওই জওয়ান যা করেছেন তাঁর জন্য ওনাকে ধন্যবাদ। আমরা সকলে ওনার পাশে রয়েছি। উনি চড় মেরেছেন কারণ কঙ্গনার (Kangana Ranaut) মন্তব্য ওনার স্বাভিমানে আঘাত করেছে। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সব নেতাদের উচিৎ নিজেদের মুখে লাগাম রাখা।”
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দিল্লি যাওয়ার পথেই চণ্ডীগড়ে এই অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে। এরপরই ভিডিও বার্তায় কঙ্গনা রানাউত বলেন, “আমি উদ্বিগ্ন পাঞ্জাবে বাড়তে থাকা সন্ত্রাস নিয়ে। কী করে এদের সামলাব আমরা?” কিন্ত কেন এমন কাণ্ড ঘটালেন কুলবিন্দর কৌর? প্রশ্নের মুখে পড়তেই তাঁর সপাট জবাব, “কঙ্গনা বলেছিলেন ১০০ টাকার জন্য কৃষকরা ওখানে বসে আছে। উনি কি গিয়ে বসেছিলেন সেখানে? কঙ্গনা যখন এহেন কটুক্তি করছিলেন কৃষক আন্দোলন নিয়ে, তখন আমার মা শামিল ছিলেন ওই প্রতিবাদে।” বোনের সমর্থনে মুখ খুলেছেন তাঁর ভাই শের সিং মহিবালও। তাঁর কথায়, “কঙ্গনার পার্স চেকিংয়ের সময়ই ঘটনাটা ঘটেছে বলে জানতে পারলাম। উনি বলেছিলেন, পাঞ্জাবের আন্দোলনরত মহিলারা ১০০ টাকায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বাকবিতণ্ডার মাঝে মাথা ঠান্ডা না রাখতে পেরেই হয়তো আমার বোন চড় কষিয়েছে।”
এদিকে চড় কাণ্ডের জেরে বরখাস্ত করা হয়েছে অভিযুক্ত ওই জওয়ানকে। স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের হলে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোটা ঘজটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে গোটা দেশে। একদিকে এই ঘটনায় অভিনেত্রী দেবলীনা ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলেছেন দেশের নিরাপত্তা নিয়ে। নাম উল্লেখ না করেও কঙ্গনার পাশে দাঁড়িয়েছেন রবিনা ট্যান্ডন। অন্যদিকে, উল্টো সুর শোনা গিয়েছে বিশাল দাদলানির গলায়। সমাজমাধ্যমে ঘটনার ভিডিয়ো পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘কোনও রকম হিংসার ঘটনা সমর্থন করি না আমি। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীর রাগের কারণ বুঝতে পারছি।’ একইসঙ্গে জানান, কুলবিন্দরের জন্য কাজের ব্যবস্থা তিনি করেই রেখেছেন, পরিস্থিতি তেমন হলেই তিনি সে কাজে যোগ দিতে পারবেন। এর পরই বিশাল লিখেছেন সেই স্লোগান ‘জয় হিন্দ, জয় জওয়ান, জয় কিসান।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.