সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) হল মূলত পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়ণের শিকার সংখ্যালঘুদের ভারতের নাগরিকত্ব প্রদানের আইন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ কেন্দ্রের একাধিক মন্ত্রী বারবার এটাই বলে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করছেন, যে এই আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য, কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়। দেশজুড়ে বিজেপির নেতা-কর্মীরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এটাই বোঝাচ্ছেন। কিন্তু ধর্মীয় নিপীড়ণ প্রমাণ করা কি সহজ? প্রশ্ন তুলেছেন খোদ গেরুয়া শিবিরেরই এক নেতা। অসমের উপমুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বক্তব্য, CAA’র জন্য ধর্মীয় নিপীড়ণ প্রমাণ করা সত্যি মুশকিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার নিপীড়ণের প্রমাণ যাচাই করবে।
হিমন্ত শুক্রবার জানিয়েছেন, ‘ধর্মীয় নিপীড়ণ প্রমাণ নাও মিলতে পারে। কিন্তু শরণার্থীরা যে ২০১৪ সালের আগে ভারতবর্ষে এসেছে এটা প্রমাণ করতেই হবে। ধর্মীয় নিপীড়ণের প্রমাণ থাকবে কী করে? বাংলাদেশের কোনও থানা কি তাঁদের কোনও নথি দেবে সেই নিপীড়ণের প্রমাণ হিসাবে?’ সেক্ষেত্রে তঁদের নাগরিকত্ব কোন আধারে প্রদান করা হবে? হিমন্তের যুক্তি, ভারত সরকার তখন যাচাই করে দেখবে, ওই শরণার্থীরা যেখানকার বাসিন্দা ছিলেন সেখানে কোনও ধর্মীয় উৎপীড়ণের ঘটনা সাম্প্রতিককালে ঘটেছিল কি না।
অসমের উপমুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য অনেক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। হিমন্তের বক্তব্য অনুযায়ী, যদি ধর্মীয় নিপীড়ণ প্রমাণই যদি না করা যায় তাহলে কেন এই আইন লাগু করার জন্য তাড়াহুড়ো করছে কেন্দ্রীয় সরকার? সওয়াল করেছেন বিরোধীরা। বাস্তবিক অর্থেই ধর্মীয় উৎপীড়ণের কথা প্রমাণ করা কার্যত অসম্ভব। কারণ শরণার্থীরা তো উৎপীড়ণের কাগজপত্র দেখাতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে হিমন্তের কথা অনুযায়ী, ওই তিন দেশের শরণার্থীরা যেখানকার বাসিন্দা সেখানকার সাম্প্রতিকতম ধর্মীয় হিংসার ঘটনা খুঁজে বের করতে হবে সরকারকে। যা বেশ সময়সাপেক্ষ। তাহলে ততদিন ওই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি আটকে থাকবে? উঠছে প্রশ্ন। আবার বহুবছর আগে যাঁরা শরণার্থী হিসাবে এদেশে চলে এসেছেন, তাঁরা কীভাবে পুরনো ধর্মীয় হিংসার শিকার হয়েছেন তা প্রমাণ করবেন? বিজেপি নেতার কথাতেই অনুমেয়, নাগরিকত্ব আইনের ফাঁকফোকর রয়েছে যা অনস্বীকার্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.