সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন এক যুবক৷ মুখে একগাল দাড়ি৷ চোখের দৃষ্টি নিশ্চল৷ পিছনে রয়েছে একটি ব্যানার৷ তাতে লেখা, ‘৩৭০ ধারা বাতিল করা হোক৷ শেষ হোক সন্ত্রাসবাদ৷’ সেই দিনের পর কেটে গিয়েছে বহু বছর৷ এখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে। ‘প্রতিশ্রুতি পূরণ’ করলেন। তিনি নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে যখন উত্তাল দেশ, ঠিক সে সময় প্রধানমন্ত্রীর একটি পুরনো ছবি টুইট করে হইচই ফেলে দিয়েছেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব। ৩৭০ ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে মোদির বিক্ষোভ প্রদর্শনের সেই ছবি টুইট করে বিজেপি নেতা রামমাধব লিখেছেন, ‘প্রতিশ্রুতি পূরণ হল’।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরের দিকে কড়া নজর রাখছেন ট্রাম্প, বার্তা আমেরিকার]
সোমবার পুনর্জন্ম হয় কাশ্মীরের৷ দ্বিতীয়বার বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় ফেরার ১০০ দিনের মধ্যেই কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ও ৩৫এ ধারার বিলুপ্তি ঘটায় মোদি সরকার৷ ওই রাজ্য ভেঙে গঠন হয় লাদাখ ও জম্মু-কাশ্মীর দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের৷ এই সময়ে সেখানকার আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে নয়াদিল্লির৷ আর তাই এয়ারলিফট করে উপত্যকায় বাড়তি ৮ হাজার আধাসেনাও পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ নয়াদিল্লির বিভিন্ন কার্যকলাপে গত কয়েকদিন ধরেই কাশ্মীর নিয়ে জল্পনা বাড়ছিল৷ রাষ্ট্রপতির কাছে ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা বাতিলের প্রস্তাব পেশ হওয়ার আগেই, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় বাসভবনে মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী৷ তার আগে সাতসকালেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ একান্তে আলোচনা করেন তিনি। তারপর কথা বললেন নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটির সঙ্গেও। সব শেষে জল্পনার অন্ত ঘটিয়ে সংসদে বিতর্কিত ৩৭০ ধারা রদে রাষ্ট্রপতির সম্মতির কথা ঘোষণা করেন অমিত শাহ৷
Promise fulfilled pic.twitter.com/iiHQtFxopd
— Ram Madhav (@rammadhavbjp) August 5, 2019
এদিকে, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তান দুই পক্ষকেই উত্তেজনা প্রশমন করার আবেদন জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ বিগত ২৪ ঘণ্টায় জম্মু-কাশ্মীরে যা ঘটেছে, সমস্ত বিষয়ে নজরে রাখছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ সোমবার এই ইস্যুতে মুখ খোলেন মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র মর্গ্যান ওর্টাগা৷ তিনি জানান, “আমরা জম্মু-কাশ্মীরের প্রতিটি ঘটনার উপর নজর রাখছি। ভারত এই রাজ্য নিয়ে যে যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সব কিছু লিখে রাখছি আমরা। যদিও ভারতের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, গোটা বিষয়টাই অভ্যন্তরীণ৷ তাও আমরা ওই রাজ্যের প্রত্যেক মানুষের অধিকার নিয়ে চিন্তিত। আমরাও সব পক্ষের কাছে আরজি জানাচ্ছি, একসঙ্গে শান্তি বজায় রেখে সব সমস্যা মেটানোর। এবং সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার৷” কাশ্মীর ইস্যুতে আমেরিকার এই মন্তব্যকে কূটনৈতিক চাল হিসাবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁদের মতে, আগেই এই ইস্যুতে দু’বার মধ্যস্থতার বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ এবং ট্রাম্পের সুরে সুর মিলিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান৷ তবে বারবারই এই আরজি খারিজ করেছে নয়াদিল্লি৷ তাই এদিন আবারও কাশ্মীর ইস্যুতে মুখ খুলে আসলে ভারতকে চাপে রাখতে চাইছে ওয়াশিংটন৷
[আরও পড়ুন: রাম মন্দির চত্বরে বিগত ৮৫ বছর পা পড়েনি মুসলিমদের, জানাল নির্মোহী আখড়া]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.