সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভাষা আন্দোলনের আগুনে পুড়ছে তামিলনাড়ু। জাতীয় শিক্ষানীতির নামে জোর করে হিন্দি চাপানোর অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই হিন্দি হঠাও নীতিতে তামিলনাড়ুর স্টেশন থেকে মোছা হল হিন্দি নাম। রবিবার তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুর পলাচি স্টেশনে কালো কালি দিয়ে নাম মুছলেন ডিএমকে সদস্যরা। অন্যদিকে স্ট্যালিনের হুঁশিয়ারি, কেন্দ্র ১০ হাজার কোটি টাকা দিলেও জাতীয় শিক্ষানীতি রাজ্য লাগু হবে না।
কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী শিক্ষা ব্যবস্থায় তিনটি ভাষার উপর জোর দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তামিলনাড়ুর ক্ষেত্রে যা হল তামিল, হিন্দি ও ইংরেজি। এই নীতিতেই আপত্তি স্ট্যালিন সরকারের। শনিবার এই বিষয়ে স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দেন, “কেন্দ্র ২ হাজার কোটি টাকার পরিবর্তে যদি ১০ হাজার কোটি টাকাও দেয় তাহলেও এ পাপ আমি করব না। এই নীতিতে সই করলে তামিল সমাজ ২ হাজার বছর পিছনে চলে যাবে।” স্ট্যালিন আরও বলেন, “দ্রাবিড় আন্দোলন ৮৫ বছর ধরে তামিল ভাষার রক্ষায় লড়াই করছে। গত ৭৫ বছরে ভারতে ৫২টি ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে হিন্দি আগ্রাসনে। শুধুমাত্র হিন্দি বলয়ে ধ্বংস হয়েছে ২৫ টি ভাষা। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য আমাদের রাজ্যের দুই চোখ। এখানে জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া আমরা মানব না।”
গত বুধবার হিন্দির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন স্ট্যালিনপুত্র উদয়নিধি। রাজ্যের উপর কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “হিন্দি ভাষা উত্তরের রাজ্যগুলির একাধিক স্থানীয় ভাষাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। রাজস্থানি, হরিয়ানভি, ভোজপুরি-সহ আরও একাধিক ভাষাকে শেষ করে সেখানকার স্থানীয় ভাষা হয়ে উঠেছে হিন্দি। যদি তামিলনাড়ুতে এই ভাষা লাগু করা হয় তাহলে তামিল ভাষাকেও ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে এরা।” প্রয়োজনে ভাষাযুদ্ধের জন্যও তৈরি তামিলনাড়ু, এমনটাই জানিয়েছিলেন সেরাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী। এই ইস্যুতে খোদ প্রধানমন্ত্রীকেও চিঠি লেখেন স্ট্যালিন।
তুমুল বিরোধিতার মাঝে পালটা স্ট্যালিনকে চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। যে চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে কোনও ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে বিদেশি ভাষার প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা রয়েছে। তার জেরে পড়ুয়ারা নিজের ভাষার গভীরে যেতে পারছে না। জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে ভাষা চয়নের স্বাধীনতা পাবে পড়ুয়ারা। নিজের পছন্দের ভাষায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে তারা। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর খোঁচা, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যই জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করছে ডিএমকে। কিন্তু মোদি সরকার চায় যেন তামিল ভাষা এবং সংস্কৃতি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে যাক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.