সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উপর পুলিশ নির্যাতনের অভিযোগের বিরুদ্ধে সরব বিজেপি বিরোধী নেতৃত্ব। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার একদিকে যেমন দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের সামনে টানা দু’ঘণ্টা মৌন অবস্থান করলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। অবস্থান শেষে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “দেশের হৃদয়ে ক্ষতবিক্ষত।” অন্যদিকে, সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢোকার তীব্র নিন্দা করেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও। কলকাতার মিছিল শেষে পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
রবিবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করে দিল্লিতে পুলিশের রোষের মুখে পড়তে হয় জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের। ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের মারধরের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। অন্তত ৫০ জন পড়ুয়াকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ। অসমর্থিত সূত্রের খবর, সোমবার দুই আন্দোলনকারীকে দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের দেহে বুলেটের আঘাত রয়েছে বলে খবর। যদিও আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে দিল্লি পুলিশ।
সোমবার পুলিশের এই আচরণের নিন্দা করে মিছিলে শামিল হন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। পুলিশ মিছিল আটকে দিলে ইন্ডিয়া গেটের সামনে মৌন অবস্থান করেন তিনি ও কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “পড়ুয়াদের উপর হামলার অর্থ দেশের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করা। ছাত্রসমাজ দেশের হৃদয়।” নাগরিকত্ব সংশেোধনী বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এদিন সুর চড়ান তিনি। প্রিয়াঙ্কার কথায়, “দেশের সংবিধান বদলে দিতে চাইছে কেন্দ্র সরকার।” রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে লাইব্রেরি কাঁদানে গ্যাস ছোড় ও পড়ুয়াদের সেখান থেকে বের করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেত্রী বলেন, “আমিও একজন মা। তুমি (পুলিশ) বিশ্ববিদ্যালের লাইব্রেরিতে ঢুকে পড়ছ। তাদের টেনে হিঁচড়ে বের করে মারধর করলে। এটা তো পুরোপুরি স্বৈরাচার!”
অ্ন্যদিকে একই বিষয় সরব হয়েছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও। তাঁর কথায়, “কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশ এভাবে ঢুকতে পারে না। গণতন্ত্রে এটা মেনে নেওয়া যায় না। উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের চেষ্টা।” একই সুর শোনা গিয়েছে সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার গলাতেও। তিনি বলেন, ‘‘এটা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টামাত্র। পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে যে বর্বরোচিত ঘটনা ঘটিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা করছি।’’ গোটা ঘটনার তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। ছাত্রদের আন্দোলনে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বাম নেতৃত্বের প্রশ্ন, পুলিশকে ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি কে দিয়েছি্ল?যে বা যারা অনুমতি দিয়েছিলেন তাঁদের গ্রেফতারির দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে কলকাতায় নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী মিছিল শেষে এই ঘটনার নিন্দা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কাল যা ঘটেছে শুনেছি, অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.