ফাইল ছবি
সুব্রত বিশ্বাস: যাত্রী প্রতীক্ষালয়, ক্লোকরুম, বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য ব্যবহৃত হুইল চেয়ার (Wheel Chair) আগেই তুলে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি সংস্থার হাতে। এবার রেলের গুরুত্বপূর্ণ পার্সেলের পুরো ব্যবস্থাতেই বেসরকারিকরণের ছোঁয়া। হাওড়া, শিয়ালদহ, কলকাতা সব স্টেশনের পার্সেলই এবার যাচ্ছে বেসরকারি হাতে। বাৎসরিক ১৬০ কোটির বিনিময়ে তিন স্টেশনের পার্সেল (Parcel) নেওয়ার চুক্তি প্রক্রিয়াও হয়ে গিয়েছে। পূর্ব রেলের প্রিন্সিপাল চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সৌমিত্র মজুমদার জানিয়েছেন, নতুন এই ব্যবস্থায় বছরে পূর্ব রেলের ভাঁড়ারে বাড়তি পঞ্চাশ কোটি টাকা আসবে। এছাড়া কয়েকশো মানুষের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগাযোগ করতে হবে না রেলকে। এক সংস্থার সঙ্গে সংযোগ রেখেই এই আয় করা যাবে।
রেলের আয় বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বেসরকারিকরণ পদ্ধতির তীব্র বিরোধিতা শুরু করেছে রেলের কর্মী সংগঠন। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, ”রেলের পণ্য মাশুল সবসময়ই কম। তা সত্ত্বেও সড়ক পরিবহণের সঙ্গে পাল্লায় সব সময় পিছিয়ে রয়েছে রেল। বেসরকারি সংস্থার (Privatization) হাতে পার্সেল চলে গেলে পণ্য মাশুল বাড়বে স্বভাবতই। সেই ধাক্কায় পণ্য সব রেল ছেড়ে সড়ক পরিবহণে চলে যাবে। এই পরিস্থিতি রেলের পণ্য পরিবহণে ধস নামাবে।” আশঙ্কা, যে সব পণ্য রেল পরিবহণে যাবে তার দাম বাড়াতে বাধ্য হবেন ব্যবসায়ীরা বলে দাবি।
পূর্ব রেলের পিসিসিএমের কথায়, ”এখন তিন স্টেশনে রেলের পার্সেলের থেকে বাৎসরিক আয় একশো কোটি। বেসরকারি সংস্থাটি বছরে দেবে দেড়শো কোটি। ফলে পঞ্চাশ কোটি বাৎসরিক আয় বাড়বে পার্সেলে।” আয় বাড়াতে বেসরকারি সংস্থাও পরিবহণের মাশুল বৃদ্ধি করবে। আর এজন্য বাজার দর বাড়ার শঙ্কা একশো শতাংশ বলে মনে করেছেন রেলের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরাই। তিনটি স্টেশনের পার্সেল পুরোপুরি বেসরকারি সংস্থার হাতে গেলে সেখানকার প্রায় হাজারখানেক কর্মীকে অন্যত্র সরানো হবে। শিয়ালদহের ডিআরএম এস পি সিনহার বক্তব্য, পার্সেল কর্মীদের স্থানান্তরিত করতে বিশেষ অসুবিধা হবে না। বুকিং থেকে টিকিট পরীক্ষক বা অপারেশন যে কোনও দপ্তরে তাঁদের দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এখন পার্সেলে বুকিংয়ের জন্য মার্কেটিং করেন রেলের কর্মীরাই। বেসরকারি সংস্থা এই বুকিংয়ের কাজ শুরু করলে উন্নত পরিষেবা পাওয়া যাবে বলে মনে করেছেন হাওড়া ডিআরএম (DRM) মণীশ জৈন। পাশাপাশি রেলের সব ব্যবস্থাই ক্রমশ বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে কর্মী সংগঠনের দাবি। অভিযোগ, সরকারি সম্পত্তির সব নিয়ে বেসরকারি সংস্থা শুধু আয় করবে। চাপে পড়ে পার্সেল ব্যবস্থা ই-টেন্ডারের মাধ্যমে করা হয়। খুব শিগগির তা হস্তান্তর হতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.