বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বাংলার রাজনীতিতে বহুদিনের প্রবাদ ‘রাজ্যে কুস্তি, দিল্লিতে দোস্তি’। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও সেই প্রবাদ চাক্ষুস করলেন বিরোধী শিবিরের প্রার্থী। তবে বাংলায় নয়। আরব সাগরের ধারে মালয়ালি রাজ্যে। ভোট চাইতে গিয়ে দু’পক্ষের সাংসদ ও বিধায়কদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করতে হলো যশবন্ত সিনহাকে (Yashwant Sinha)।
দিল্লিতে দু’দলের শীর্ষনেতারা গলাগলি করলেও রাজ্যে তারাই একে অপরের মুখ দেখেন না। রাজ্যের নাম কেরল। মালয়ালি রাজ্যের শাসক-বিরোধী দু’পক্ষই যশবন্তকে সমর্থনের হাত বাড়ালেও রাজনৈতিক শত্রুতার কারণে বৈঠক আলাদা করতে বাধ্য হলেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদপ্রার্থী যশবন্ত সিনহা। তিনিও জানেন, এই রাজ্যের প্রধান দুই প্রতিপক্ষকে মুখোমুখি বসান কার্যত অসম্ভব।
কেরলে ক্ষমতায় সিপিএম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ (LDF)। আবার বিরোধী আসনে কংগ্রেস (Congress)। রাজ্যে দু’পক্ষ চিরশত্রু বলেই পরিচিত। বিধানসভার অধিবেশন ছাড়া সাধারণত মুখোমুখি বসে না দুই দল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও সেই ঐতিহ্য অব্যাহত রাখল সিপিএম (CPM) ও কংগ্রেস। নিজেদের প্রার্থীর ক্ষেত্রেও ‘সর্বসম্মত’ হয়ে এক হতে পারল না। আবার দু’পক্ষই সব সদস্যকে একত্র করতে পারেনি। যশবন্তর প্রচারের পরদিনই নিজের লোকসভা ওয়েনড়ে যাবেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। সেখানে নেতার আগমনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি। তাঁরা নিজেদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর প্রচারে অনুপস্থিত ছিলেন। অপরপক্ষে, মাল্লাপুরনমে সিপিএমের এক মন্ত্রীর মৃত্যুর শেষযাত্রায় হাজির হন বেশ কয়েকজন সিপিএম মন্ত্রী ও বিধায়ক। ফলে বামেরাও যশবন্তের সামনে পুরো ‘টিম হাজির করতে পারেনি।’
মঙ্গলবার রাতেই তিরুঅনন্তপুরমে পৌঁছন বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী যশবন্ত সিনহা। কেরল (Kerala) দিয়েই প্রচার শুরু করলেন তিনি। কারণ মালয়ালি রাজ্যের শাসক ও বিরোধী উভয়পক্ষই সমর্থনের হাত যশবন্তর দিকেই বাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ডাকা প্রথম বৈঠকেই হাজির হন দু’পক্ষের শীর্ষনেতৃত্ব। আবার মনোনয়নের দিন কার্যত হাত ধরাধরি করে সংসদ ভবনে হাজির হন রাহুল গান্ধী ও সীতারাম ইয়েচুরি (Sitaram Yechuri)। কিন্তু প্রচারে দু’পক্ষকে একমঞ্চে আনতে পারলেন না প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। বুধবার দুপুরে প্রথমে কেরলের শাসকদল সিপিএমের সঙ্গে বৈঠক করেন। স্বাগত জানান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। পরে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফের সাংসদ ও বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি যশবন্ত সিনহা। তিনি জানান, একমাত্র রাজ্য কেরল যেখানে শাসক ও বিরোধী সকলেই আমার পক্ষে রয়েছেন। অন্য কোনও রাজ্যে এমন চিত্র পাওয়া যাবে না। তাই কেরল দিয়েই প্রচার শুরু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.