আফগানিস্তানে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগান তালিবানের সঙ্গে মার্কিন শান্তি চুক্তি নিয়ে গোড়া থেকেই উদ্বিগ্ন ভারত। আঞ্চলিক স্থিতবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিয়ে সাউথ ব্লকের অন্দরে উত্তেজনাও কিছু কম নেই। মঙ্গলবার কিছুটা হলেও ভারতের উদ্বেগ প্রশমিত করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ভারত সফরের দ্বিতীয় দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথ সম্ভাষণে ট্রাম্প জানান, আফগানিস্তানে তালিবান-আমেরিকা শান্তি চুক্তি নিয়ে মোদির সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি।এদিন ট্রাম্প বলেন, “প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তি নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলেছি। আমার মনে হয়, এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়া দেখতে চাইবে ভারত। আফগানিস্তানে তালিবানের সঙ্গে শান্তি স্থাপনে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “আফগানিস্তানে আমরা সেনা নয়, পুলিশের ভূমিকায় কাজ করছি। কিন্তু আমরা পুলিশ নই, নিজের দেশের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব আফগানদের নিজেদেরই নিতে হবে। আমি চাইলে সহজেই কয়েক লক্ষ মানুষকে হত্যা করে এই যুদ্ধ জিততে পারি। কিন্তু আমি তা চাই না। দেখা যাক কী হয়। “
উল্লেখ্য, চলতি মাসের প্রথম দিকে জার্মানির মিউনিখ শহরে ট্রাম্প সরকারের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি জালমে খলিলজাদের সঙ্গে দেখা করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে তালিবানের সঙ্গে আসন্ন শান্তি চুক্তি নিয়ে প্রাথমিক কথা হয় দু’জনের মধ্যে। সেখানে নয়াদিল্লিকে জানানো হয়, এই চুক্তি নিয়ে আমেরিকা এবং আফগানিস্তানের আশরফ ঘানি সরকার একমত হতে পেরেছে। চুক্তি সই হওয়ার পরে অস্ত্র ত্যাগ করবে তালিবান জঙ্গিরা এবং মার্কিন সেনা ধীরে ধীরে সে দেশ থেকে চলে যাবে। তার পরে আফগানিস্তানের বর্তমান নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তালিবানের আলোচনা শুরু হবে। ফেব্রুয়ারির ২২ থেকে ২৮-এর মধ্যে হিংসাত্মক কার্যকলাপ কমাতে থাকবে তালিবান জঙ্গিরা। যদি তা একবারেই কমিয়ে ফেলা যায়, তবে ট্রাম্প দিল্লি থেকে ফিরে যাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই দু’তরফের মধ্যে লিখিত চুক্তি সই হতে পারে।
নয়াদিল্লির আশঙ্কার মূল কারণ হচ্ছে মার্কিন সেনা সরে যাওয়ার পরে আফগানিস্তানে পাকিস্তানের ভূমিকা। পাকিস্তান বরাবরই বলে এসেছে, আফগানিস্তানে রাজনৈতিক ও প্রতিরক্ষা কর্মকাণ্ডে ভারতের কোনও ভূমিকা নেই, থাকতে পারে না। অন্য দিকে ভারতও কিন্তু আফগানিস্তানের পরিকাঠামো পুনর্গঠন ও মানবিক সাহায্যের দিকেই মূলত নজর দিয়ে এসেছে এত দিন। কিন্তু এখন ভারতকে সতর্ক থাকতে হবে যে, মার্কিন বাহিনী সরে যাওয়ার পরে ইসলামাবাদ যেন নয়াদিল্লিকে নতুন কোনও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে না পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.