সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাধারণতন্ত্র দিবসে হিংসা এবং জাতীয় পতাকার অপমান দুর্ভাগ্যজনক। দশকের প্রথম বাজেট অধিবেশনের আগে কার্যত বিরোধীশূন্য সংসদে মন্তব্য করলেন রাষ্ট্রপতির রামনাথ কোবিন্দ (Ramnath Kovind)। বলে দিলেন, “যে গণতন্ত্র শান্তিপূর্ণভাবে অহিংস বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার দেয়, অভিব্যক্তির স্বাধীনতা দেয়। সেই সংবিধানই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার কথাও বলে। সাধারণতন্ত্র দিবসে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে এবং তেরঙ্গার অপমান হয়েছে, তা দুর্ভাগ্যজনক।”
সংসদের এবারের বাজেট অধিবেশন এমন এক পরিস্থিতিতে, যখন দেশের বহু কৃষক রাজধানীর বাইরে বিক্ষোভ (Farmers Protest) দেখাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যাশিতভাবেই রাষ্ট্রপতির ভাষণের একটা বড় অংশ জুড়ে রইল কৃষক ইস্যু। রামনাথ কোবিন্দ বোঝানোর চেষ্টা করলেন, কেন্দ্রের এই তিন নয়া আইনে (Farm Laws) আসলে ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকদের উপকার হবে। কৃষি আইন নিয়ে বিরোধীরা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রপতির কথায়, “সময়ের দাবি মেনে আমাদের ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকদের অবস্থার পরিবর্তনের প্রয়োজন। দেশের ৮০ শতাংশ কৃষক এই শ্রেণীর মধ্যে পড়ে। এঁদের সংখ্যা ১০ কোটিরও বেশি। ব্যাপক আলোচনার পর ৭ মাস আগে তিনটি কৃষি আইন পাশ করিয়েছিল সরকার। এই তিনটি আইনের সবচেয়ে বড় সুবিধা এই ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরাই পাবেন। সেটা বুঝতে পেরে অনেক রাজনৈতিক দলও এটাকে সমর্থন করেছে। এই কৃষি আইন নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, আমাদের সরকার তা দ্রুত দূর করার চেষ্টা করবে।”
মোদি সরকার যে সুপ্রিম কোর্ট বা সংবিধানের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনও পদক্ষেপ করছে না, সেটাও এদিন বোঝানোর চেষ্টা করেছেন রাষ্ট্রপতি। সেই সঙ্গে সরব হয়েছেন সাধারণতন্ত্র দিবসের হিংসার ঘটনা নিয়েও। তিনি বলেন, “সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এই তিনটি কৃষি আইনে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। গণতন্ত্র এবং সংবিধানকে সম্মান করে আমরা সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশ পালন করব। যে গণতন্ত্র শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ দেখানোর এবং অভিব্যক্তি প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়, সেই সংবিধানই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার কথাও বলে। আমাদের সরকার কৃষকদের আশ্বস্ত করতে চায়, পুরনো আইনে কৃষকরা যা যা সুবিধা পেতেন, তা একটুও কমানো হবে না। “
কেন্দ্রের কৃষি আইন (Farm Laws) এবং কৃষকদের কলুষিত করার চেষ্টার প্রতিবাদে এবারের বাজেট অধিবেশনের আগে রাষ্ট্রপতির ভাষণ বয়কট করেছে মোট ১৯টি বিরোধী দল। এর মধ্যে সদ্য এনডিএ ছাড়া অকালি দলও (Akali Dal) রয়েছে। রয়েছে বিজেপির সঙ্গে সদ্য ঘনিষ্ঠতা তৈরি করা বিএসপিও (BSP)। যার ফলে এদিন সংসদের অধিবেশন ছিল কার্যত বিরোধী শূন্য। সেই বিরোধী শূন্য সংসদ ভবনকে সাক্ষী রেখেই রাষ্ট্রপতি কৃষি আইনের ‘সুখ্যাতি’ করে সরকারকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে দিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.