সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনের জেরে বন্ধ সমস্ত যানবাহন। তাই হেঁটেই বাড়ির পথ ধরেছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। মুম্বই এবং পার্শ্ববর্তী শহর ভিওয়ান্দি সংযোগকারী রাস্তা ধরে বহু পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের হাঁটতে দেখা যাচ্ছে যাচ্ছে। বুধবারও তার বিরাম ছিল না। এদিন নবি মুম্বইয়ের ঘনসোলি থেকে মহারাষ্ট্রের বুলধনায় তাদের গ্রামে ২০ জনের একটি দল যাচ্ছিল। তবে সেই দলে ছিলেন এক সাত মাসের গর্ভবতী মহিলা। বাড়ি ফেরার তাড়নায় অল্প কিছু খাবার ও অর্থ নিয়ে পায়ে হেঁটেই গ্রামের পথ ধরেছেন বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার রাত ৭টা নাগাদ যাত্রা শুরু করেন ওই গর্ভবতী মহিলা। নাম নিকিতা। টানা ১২ ঘণ্টা হাঁটেন তিনি। বলেন, “আমি মাত্র একবার বসেছি।” তাঁর পিছনে একজন তাঁর জিনিসপত্র নিয়ে হাঁটলেন। কিন্তু শরীরের এই অবস্থায় হাঁটার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন তিনি? নিকিতা জানান, “আমরা এখানে কী করব? আমাদের খাবার ও জলের এখানে কোনও ব্যবস্থা নেই।” তাঁর পিছনে হাঁটতে থাকা ছেলেটি জানান, “একবার বর্ষা এসে গেলে বিপদ। তখন আরওই খাবার পাওয়া যাবে না। আমরা পুলিশের কাছে অনুমতি নিতে গিয়েছিলাম। ওরা মেরেছে।”
অন্য অনেকের মতো তাঁদেরও মত, সরকার পরিযায়ী শ্রমিকের জন্য যে বিশেষ ট্রেনের বন্দোবস্ত করেছে, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে অনেক। তাই হাঁটার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরাও। ওই দলে আরও এক মহিলাকে দেখা গেল। তিনি একটি শিশুকে তাঁর কাঁধে এবং আরও একটি শিশুকে পিঠে নিয়ে হাঁটছিলেন।
মুম্বইয়ের অন্য আর একটি জায়গায় ১৫ জন যুবকের একটি পরিযায়ী শ্রমিকের দল প্রায় বিহারের দরভাঙায় আসার জন্য সাইকেল চালানো শুরু করেছেন। সাইকেলের কেরিয়ারে কয়েকটি জামাকাপড় ও স্টিলের বাসন বেঁধেই রওনা দিয়েছেন তাঁরা। বুধবার ভোর তিনটেয় তাঁরা মুম্বইয়ের সান্তা ক্রুজ থেকে রওনা দেন। যদি তাঁদের প্রতিটি রাজ্যের সীমান্তে নাও থামানো হয়, তাহলেও গন্তব্যে পৌঁছতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগবে। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এই আশার কথা শুনছেন। বলা হয়েছিল ১৪ তারিখের পর তাঁদের বাড়ি পাঠানো হবে। কিন্তু ৪৫ দিন কেটে গিয়েছে, এখনও অবধি কিছুই হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.