সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে দেশের মানুষের মধ্যে। বিদেশ থেকে ফিরলেই অন্তত ১৪ দিন বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে যেতে হচ্ছে। আর এই টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে জন্মের আগেই প্রাণ গেল এক শিশুর। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ম্যাঙ্গালোরে। করোনার ভয়ে তাঁকে কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। ফলে মৃত্যু হয় গর্ভস্থ শিশুর।
সম্প্রতি বন্দে ভারত মিশনের আওতায় বিদেশ থেকে বেশ কিছু ভারতীয় নাগরিককে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এই গর্ভবতী মহিলাও ছিলেন। দুবাই থেকে দেশে ফেরেন তিনি। তারপর তাঁকে একটি সরকারি জায়গায় কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। সেখানে ৩ দিন ছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁর লালারস পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপর ম্যাঙ্গালোরে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে নিয়ম মেনে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথাও বলা হয়। কিন্তু অ্যাপার্টমেন্টের অন্য বাসিন্দারা তাঁকে ভিতরে ঢুকতে দেননি বলে অভিযোগ।
শেষ নয় এখানেই। ওই গর্ভবতী মহিলা চিকিৎসা ও কোয়ারেন্টাইনের জন্য শহরের অন্য হাসপাতালগুলিতেও যান। কিন্তু সেখান থেকেও কোনও সাহায্য পানননি তিনি। সব জায়গা থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। ওই মহিলার মাসি জানিয়েছেন, “ও নিজের পরিবারের কাছে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু অ্যাপার্টমেন্টের লোকেরা ওকে ঢুকতে দেয়নি। এমনকী বেসরকারি হাসপাতালগুলোও ওকে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে এবং ওর চিকিৎসা করতে অস্বীকার করে।” ১২ মে দুবাই থেকে ভারত ফেরেন তিনি। গর্ভবতী অবস্থায় তারপর থেকে এভাবেই, এখানে ওখানে ঘুরে দিন কাটছিল ওই মহিলার। গর্ভবস্থায় এত মানসিক চাপ ও শারীরিক ধকল সহ্য করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। গর্ভেই মৃত্যু হয় সন্তানের।
ইস্যুটি নিয়ে ম্যাঙ্গালোর কর্পোরেশন কমিশনার অ্যাপার্টমেন্ট সংস্থাকে নোটিশ পাঠিয়েছে। তাতে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে কেন ওই মহিলাকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি? কেউ কাউকে নিজের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দিতে পারে না। তাহলে মহিলার ক্ষেত্রে কেন এমন হল, তা জানতে চেয়ে নোটিশ জারি করেন কমিশনার। মহিলার মাসি বলেছেন, “খুব অসহায় লাগছে। ওকে একটা হোটেলে রাখা হয়েছে। ওখানে থেকেই ওর দ্বিতীয়বার করোনা পরীক্ষা হবে। তার জন্যই ও অপেক্ষা করছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.