স্টাফ রিপোর্টার: পরপর দু’বছর একাধিক বিধানসভা ভোট। তার পর চব্বিশের হাইভোল্টেজ লোকসভা নির্বাচন। যে নির্বাচনে বিজেপিকে হারানো অবশ্যই সম্ভব বলে মনে করছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। যদিও সেই কাজটা খুব সহজ বলে কখনই নিজের ব্যাখ্যায় জানাননি তিনি।
সোমবার একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া পিকের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে বিজেপিকে হারানোর নানা কৌশল। তিনি যা বলেছেন, খুব সংক্ষেপে বললে তা হল, চব্বিশের নির্বাচনে বিজেপিকে হারানো সম্ভব। কিন্তু তা বিরোধীদের বর্তমান ভূমিকায় সম্ভব নয়। পিকের কথায়, “এজন্য কিছু সমঝোতা আর প্রত্যেকের থেকে কিছু কিছু করে ভাল দিকগুলোকে একজোট করা।” সেক্ষেত্রে অবশ্যই কংগ্রেস এবং তৃণমূলের একজোট হওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে জানিয়েছেন পিকে। অর্থাৎ যে বিরোধী জোটের কথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলে এসেছেন।
একেবারে সংখ্যাতত্ত্বে চলে গিয়েছেন পিকে। তৃণমূলের পাশাপাশি আরও একাধিক দলের সঙ্গে তাঁর কাজের সূত্রে নানা সময় কথাবার্তা চলছে বলে দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, তিনি চব্বিশকে সামনে রেখে প্রত্যেককে কিছু কিছু করে সাহায্য করার চেষ্টা করছেন। এই প্রেক্ষিতেই তাঁর মত, যদি বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু আর কেরালার মিলিত ২০০ লোকসভা আসনের কথা ধরা যায়, তবে তার মধ্যে থেকে বিজেপি খুব বেশি হলে ৫০টি আসন পাবে। কিন্তু বাকি প্রায় সাড়ে ৩০০ আসনের মধ্যে সিংহভাগই ধুয়ে মুছে সাফ করে দেবে বিজেপি।
এখানেই কংগ্রেস আর তৃণমূলকে একসঙ্গে আসতে হবে বলে মনে করছেন পিকে। বলছেন, “যদি কংগ্রেস আর তৃণমূল কংগ্রেস একজোট হয়, আর তাদের সমস্ত রাজনৈতিক সমীকরণকে একমুখে চালিত করে, সমস্ত কৌশলকে একটি সঠিক দিকে নিয়ে যায় তবে ওই ২০০ আসনের মধ্যে থেকে তারাই ১০০ আসন বের করে আনতে পারবে।” এমনকী, তাদের বাকি সঙ্গীদের নিয়ে সেই ফলাফলই তাদের ২৫০ আসনেও পৌঁছে দিতে পারে– বলে মনে করছেন পিকে। এর পর দেশের উত্তর ও পশ্চিম অংশ থেকে আরও ১০০ আসন বের করে নেওয়া এই জোটের কাছে খুব একটা কঠিন হবে না বলেই মনে করেন পিকে।
কিন্তু এই প্রেক্ষিতে পিকে দু’টি বিষয় বারবার উল্লেখ করেছেন। প্রথমত, এই জোট কংগ্রেস ছাড়া সম্ভব নয়। আর দ্বিতীয়ত, বিজেপির বিকল্প শুধু একটি এমন কোনও বড় জাতীয় দল নেই যারা বিজেপিকে হারাতে পারে। অর্থাৎ, তাঁর নিশানা কংগ্রেসের দিকে। বলেছেন, “আমি কখনওই বলিনি বা বলছি না যে, কংগ্রেস ছাড়া কোনও জোট সম্ভব এবং সেই জোট বিজেপিকে হারাতে পারে। কিন্তু কংগ্রেসের এই বর্তমান ভূমিকাও সমর্থনযোগ্য নয়। তাকে নতুন কোনও কাঠামো নিয়ে আসতে হবে।” ঠিক এই লড়াইতেই তিনি প্রত্যেককে তাঁর সাধ্যমতো সাহায্য করতে চান বলে জানিয়েছেন ভোটকুশলী। বলেছেন, “এর ফলেই একটা শক্তিশালী ফ্রন্ট চব্বিশের লোকসভা ভোটে শক্তিশালী লড়াই দিতে পারবে।”
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসেই যে তাঁর একসময় যোগদানের বিষয় প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল তাও নিজেই উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, “বাংলার বিধানসভা ভোটের দু’বছর আগে থেকেই কথা চলছিল। কোভিডের জন্য কথা তখন এগোয়নি। ভোটের ফলাফলের পর থেকে টানা চার–পাঁচ মাস এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কংগ্রেসের একেবারে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে। কিন্তু ৯০ শতাংশ কথা চূড়ান্ত হয়ে গেলেও বাকি ১০ শতাংশই বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছিল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.