অনশন মঞ্চে প্রশান্ত কিশোর।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনৈতিক দলাদলির ঊর্ধ্বে উঠে এবার সব রাজনৈতিক দলগুলিকে পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জন সুরজ পার্টির প্রধান প্রশান্ত কিশোরের। রবিবার পাটনার অনশন মঞ্চ থেকে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ও আরজেডি বিধায়ক তেজস্বী যাদবকে এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার ডাক দিলেন তিনি। পাশাপাশি বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন, চাইলে তাঁরাও সামিল হতে পারেন আন্দোলনে।
বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে আন্দোলনে নেমেছেন পড়ুয়ারা। দাবি উঠেছে পরীক্ষা বাতিলের। পড়ুয়াদের এই আন্দোলনে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন জন সুরাজ পার্টির প্রধান প্রশান্ত কিশোর। রবিবার অনশন মঞ্চ থেকেই এবার বিরোধীদের পড়ুয়াদের আন্দোলনে সামিল হওয়ার আবেদন জানিয়ে পিকে বলেন, “গতরাতে পড়ুয়ারা ৫১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। যুব সত্যাগ্রহ সমিতি নামের এই কমিটি থেকে আন্দোলনের গতিবিধি পরিচালিত হবে। আমি শুধুমাত্র এই কমিটির একজন সদস্যমাত্র। প্রত্যেককে আবেদন জানাচ্ছি, এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য।”
এরপরই কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী ও বিহারের আরজেডি বিধায়ক তেজস্বী যাদবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “রাহুল ও তেজস্বীকে বলল এই আন্দোলনে যেন তাঁরা সামিল হন। রাহুল গান্ধীর ১০০ জন সাংসদ রয়েছেন। তেজস্বীর ৭০ জন বিধায়ক রয়েছেন। এনাদের শক্তি আমাদের তুলনায় অনেক বেশি। এঁরা চাইলে ৫ লক্ষ মানুষকে গান্ধী ময়দানে। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এটা করার প্রয়োজন। কারণ পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ বিপদের মুখে। শেষ তিন বছরে ৮৭ বার পড়ুয়াদের উপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ।” শুধু তাই নয়, বিজেপি নেতাদেরও তিনি আর্জি জানান সরকারের চোখে আঙুল দিয়ে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে। বিজেপি নেতাদের উচিত এই আন্দোলনকে সমর্থন করা। প্রশান্ত কিশোর আরও বলেন, এটা শুধুমাত্র বিপিএসসি পরীক্ষা বাতিলের আন্দোলন নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নাগরিক অধিকারের বিষয়। সরকার যত শক্তিশালীই হোক না কেন, জনগণের শক্তির চেয়ে বড় কোনো শক্তি নেই।
উল্লেখ্য, গত দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিপিএসসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। ১৩ ডিসেম্বর থেকে আন্দোলনে নেমেছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের দাবি ছিল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলার। যদিও মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার পড়ুয়াদের সেই দাবিকে গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ। এহেন পরিস্থিতিতে চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে সুর চড়ান পিকে। তাঁর নেতৃত্ব পাটনার গান্ধী ময়দান থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির উদ্দেশে পদযাত্রা বের করেন পড়ুয়ারা। যেখানে লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পর পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে আমরণ অনশনে বসেন প্রশান্ত কিশোর। এবার সেই আন্দোলনে বাকি বিরোধীদলগুলিকেও সামিল হওয়ার আবেদন জানালেন পিকে।
এদিকে গত ১৩ ডিসেম্বর বিপিএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কয়েক হাজার পড়ুয়াকে নতুন করে পরীক্ষায় বসায় অনুমতি দিয়েছিল সরকার। শনিবার পাটনার ২২টি কেন্দ্রে পুনরায় এই পরীক্ষা নেওয়া হয় পরীক্ষার্থীর জন্য। জানা গিয়েছে, মোট ১২,০১২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অ্যাডমিট ডাউনলোড করেছিলেন ৮,১১১ জন। যদিও শেষ পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশ নেন মাত্র ৫,৯৪৩ জন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.