সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে থমকে যাচ্ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। যেন বুঝেই উঠতে পারছিলেন না যা দেখছেন, তা ঠিক কিনা। আসলে ভারত কেন, তৃতীয় বিশ্বের যে কোনও দেশেই ভিক্ষুকদের দেখা পাওয়া খুব সাধারণ ঘটনা হলেও পিপিই (PPE) কিট পরে ভিক্ষা নিঃসন্দেহে অভাবনীয়! এভাবেই ওড়িশার (Odisha) এক স্বাস্থ্যকর্মীকে দেখা গেল ভিক্ষা করতে! যা দেখে হকচকিত স্থানীয় জনতা।
কিন্তু কেন? কী কারণে এমন পথ বেছে নিলেন তিনি? জানা গিয়েছে, এটা আসলে এক ধরনের ‘অভিনব’ প্রতিবাদ। ওই মহিলার নাম অশ্বিনী পাড়ি। ওড়িশার ভদ্রক জেলার চরম্পা নামের এক গ্রামের বাসিন্দা তিনি। অশ্বিনী কাঠগড়ায় তুলেছেন নবীন পট্টনায়েকের সরকারকে। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে করোনা অতিমারীর (Pandemic) প্রকোপের সময় তাঁর মতো বহু স্বাস্থ্যকর্মীকে কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি শুধরানোর পর আচমকাই কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এরপরই এই প্রতিবাদের পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।
সেকথা বলতে গিয়ে রীতিমতো অভিমান ঝরে পড়ছে অশ্বিনীর গলায়। তাঁর কথায়, ”করোনা অতিমারী ছড়িয়ে পড়ার পরে যখন রাজ্যের অবস্থা বেশ সঙ্গীন, সেই সময় রাজ্য সরকার আমাদের ‘কোভিড যোদ্ধা’ হিসেবে নিয়োগ করেছিল। আমরা আমাদের পরিবার ও নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগীদের শুশ্রুষা করেছিলাম। ন’মাস পরে সরকার কোনও রকম বিকল্প কাজের সুযোগ না দিয়ে বসিয়ে দিয়েছে।”
জানা গিয়েছে, অতিমারীর প্রকোপ বাড়ার পরে এমন হাজার আটেক কর্মীকে নিয়োগ করেছিল ওড়িশা সরকার। তাঁদের চুক্তিভিত্তিক ভাবেই নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু বছরের শেষে তাঁদের চুক্তি শেষ হওয়ার পরে আর তা পুনর্নবীকরণ করা হয়নি। ফলে নতুন বছরে রাতারাতি বেকার হয়ে গিয়েছেন এই বিপুল সংখ্যাক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী। এদিকে ওড়িশায় সংক্রমণের হারও অনেকটাই নিম্নমুখী। এই পরিস্থিতিতে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, তহবিলে টান পড়াতেই আর নতুন চুক্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।
অশ্বিনীর হুঁশিয়ারি, যদি সরকার আগামী দিনেও তাঁদের কথায় কান না দেয়, তবে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। তখন আর পিপিই কিট পরে কাউকে ভিক্ষা করতে দেখাটা কোনও বিক্ষিপ্ত দৃশ্য হয়ে থাকবে না। রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে এমন দৃশ্য। বিভিন্ন রাস্তায় চোখে পড়বে পিপিই কিট পরিহিত ভিক্ষুকদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.